Homeসাহিত্য"নাম মহিমা" - ভাস্কর বাগচী এর রম্য রচনা

“নাম মহিমা” – ভাস্কর বাগচী এর রম্য রচনা

নাম মহিমা – ভাস্কর বাগচী

“ভিক্ষা মেগে খায় সোহগী , কাষ্ঠ কাটে ধনা ”। – ভিক্ষা করে জীবন নির্বাহ করলেও আমাদের সমাজে যেমন সোহাগী নামক ভিখারীনিদের দেখা মেলে অহরহ তেমনি কাঠুরিয়ার নামও ধনপতি “ ধনা” হয়। কখন আবার কানা ছেলের নামও পদ্মলোচন (পদ্মের মত চোখ) রাখা হয়। ছাত্রজীবনে পাঠ্যবই এর বিভিন্ন গল্প-কবিতার নামকরণের স্বার্থকতা বুঝে-না বুঝেই মুর্খস্ত করিনি এমন পাঠকের খুজে না পাওয়া ভার। আবার বিখ্যাত কেউ একজন বলেছেন – নামে কি আসে যায়? কিন্তু তার সাথে দ্বি-মত পোষন করে বর্তমান সময়ে দেখছি- নামে অনেক কিছুই যায়-আসে। যেমন ধরুন , দেশে কোন নামী রাজনৈতীক দল যে কাউকে সমর্থন দিলে বা তার প্রতি করুনা বর্ষন করলে সে রাতারাতি নামী-দামী জনদরদী নেতা বনে যান ।

কোয়ালিটি বা যোগ্যতা তার যাই থাকনা কেন যেহেতু দেশের নামী রাজনৈতীক দল তাকে আর্শীবাদ করেছে তাই তাকে আর ধরে কে! কারন যে, নৈবেদ্য আর আরাধনা দিয়ে সে যেভাবে তার ইষ্টের তুষ্টি বিধান করেছে তুচ্ছ জনতা তার আর কি করবে! তাই গীতিকার ছাপোষা জনতার অবস্তাদেখে গান ধরেছেন-“ আজকে যিনি কয়লা মন্ত্রি ,কালকে তিনি শিক্ষা আর কয়লা কালো শিক্ষা নিয়ে মানুষ করে ভিক্ষা”। থাক সে প্রসঙ্গ এবার যাই অন্যদিকে-সৃষ্টিকর্তার আকার-নিরাকারত্ব নিয়ে বিশ্ববাসী দুদলে বিভক্ত থাকলেও অদ্ভুত ভাবে নাম গুনে তারা এক্কাটা, নামগত পার্থক্য তাকলেওসৃষ্টিকর্তার যে একটা নাম আছে সে বিষয়ে তারা একমত।

সত্যিই নামের কি অপার মহিমা তাইনা!আসলে পৃথিবীতে নামহীন কোন বস্তুুর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া দুস্কর আবার নামের ভিতর আছে রকমভেদ যেমন, সুনাম দুনাম বা স-নাম, বদনাম-বেনাম ঈত্যাদি। আজকাল আবালবৃদ্ববনিতা সবাই নাম কামাতে বা নামের জন্য পাগল! শিশু সন্তানের পিতা-মাতা চায় শিশুর নামীস্কুলে ভর্ত্তি, যুবা চায় নামী প্রতিষ্ঠান হোক তার কর্মত্রে, বৃদ্ধ চায় নামী-দামী চিকিৎসাও হাসপাতাল! অর্থাৎ সকলের কাছে আজ নামই দামী বা মহামুল্যবান তাই “ নামে নয় গুনে পরিচয় ” বহুল প্রচারিত এ বিজ্ঞাপনিক ভাষাটি আজ মুমূর্ষ তাই নয়কি?

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments