সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের জন্মদিনে শুভেচ্ছা, অতল শ্রদ্ধা – স্বকৃত নোমান
কদিন ধরে কথাশিল্পী সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের একটি উক্তি ভেসে বেড়াচ্ছে ফেসবুকে, যেখানে তিনি বলেছেন, ‘কোনো বিজ্ঞানী নেই, গবেষক নেই, দার্শনিক নেই। যেদিকে তাকাবেন শুধুই প্রশাসক।’ কথাগুলো পড়ে মনে হলো আমি একটি আয়না দেখলাম। সেই আয়নায় স্পষ্ট দেখতে পেলাম নিজের মুখ, জাতির মুখ। লেখকরা এভাবেই বুঝি আয়নার কাজ করেন। এভাবেই জাতির বোধের উদয় ঘটিয়ে দেন।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম সমকালীন বাংলা সাহিত্যের প্রধান গল্পকার। তাঁর অগ্রজ যেসব গল্পকার ছিলেন, তাঁরা চলে গেছেন। তিনি আছেন। আছেন আমাদের দিশারী হয়ে। তিনি আমাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। কখনো কখনো অগ্রজদের অনুপ্রেরণার দরকার হয়। অনুপ্রেরণা পেলে অনুজরা নতুন নতুন দিগন্ত আবিষ্কারে এগিয়ে যেতে পারে। সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম সেই অগ্রজ, সর্বদা যিনি অকুণ্ঠচিত্তে অনুজ লেখকদের অনুপ্রাণিত করে থাকেন।
বাংলা ছোটগল্প কোথায়, কোন উচ্চতায় অবস্থান করছে, তা টের পাওয়া যায় সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের গল্প পড়ে। ভাষায়, বিষয়ে, আঙ্গিকে তাঁর গল্প একেবারেই আলাদা। গল্পকার হিসেবে তাঁর নাম উচ্চারিত হয় সৈয়দ উয়ালীউল্লাহ্, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, হাসান আজিজুল হক, শওকত আলীর সঙ্গে। ভবিষ্যতের পাঠকদের কাছে আরও বেশি উচ্চারিত হবে এই নাম, আরও বেশি পঠিত হবে তাঁর গল্প-উপন্যাস। বাংলাদেশে ভালো উপন্যাস রচিত হচ্ছে না বলে যারা হা-হুতাশ করেন, তারা পড়ে পড়ে দেখতে পারেন তাঁর ‘আজগুবি রাত’ কিংবা ‘আধখানা মানুষ।’
আজ কথাশিল্পী, প্রাবন্ধিক, শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের জন্মদিন। জন্মদিনের শুভেচ্ছা, স্যার। আপনার জন্য অতল শ্রদ্ধা। আপনার স্নেহছায়াতল আমার পরম প্রশান্তি।