বড়াইগ্রামে স্বেচ্ছাশ্রমের সেই ট্রাফিক পুলিশের পাশে জেলা প্রশাসক
নাহিদুল ইসলাম, বড়াইগ্রাম, নাটোর নিউজ: নাটোরে বড়াইগ্রামের রাজাপুরে বাজারে বিনা পারিশ্রমিকে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বাবুল দীর্ঘ ১৫ বছর কমিউনিটি পুলিশ হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় নাটোর জেলা প্রশাসক মো. শামিম আহমেদ ১০ হাজার টাকার একটি চেক হস্তান্তর করেছেন। বৃহষ্পতিবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে জেলা প্রশাসক তার নিজ কার্যালয়ে বাবুলের হাতে এ চেক প্রদান করেন। তিনি বড়াইগ্রাম উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের রাওতা গ্রামের হাচেন আলীর ছেলে।
এ সময় জেলা প্রশাসক বলেন, বড়াইগ্রাম উপজেলার রাজাপুর বাজারে বাবুল নামের ছেলেটি প্রায় ১৫ বছর যাবত যে কাজটি করছে তা সারাদেশে অনেকের কাছে অনুকরণীয় হতে পারে। বিনা পারিশ্রমিকে স্কুলগামী ছাত্র-ছাত্রীদের সড়ক পারাপারে সহায়তা করছেন, আামাদের গাড়ী ও যাত্রীবাহী পরিবহনের যানজট মুক্ত করছেন এবং সাধারণ জনগণ যেন রাস্তা পারাপার হতে পারেন সে দায়িত্ব তিনি পালন করছেন। আমি মনে করি শুধুমাত্র জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেই নয়, সমাজে যারা বিত্তশালী রয়েছেন এবং সেখানে যারা ব্যবসায়ী রয়েছেন তাদেরও এগিয়ে আসা প্রয়োজন।
অপরদিকে বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, আমি বাবুল নামের এ ছেলেটাকে চিনি এবং সে দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর যাবত উপজেলার রাজাপুর বাজারে যেখানে একজন ট্রাফিক পুলিশ থাকার কথা কিন্তু ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় রাস্তা পারাপারে প্রায়ই ঘটতো দুর্ঘটনা। এই ধারাবাহিকতায় বাবুল নামের এই ছেলেটি বিনাপারিশ্রমিকে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করে আসছে। উর্ধ্বতন মহল সুদৃষ্টি দিলে বাবুলের ট্রাফিক পুলিশ হিসেবে চাকুরী হতে পারে।
নাটোর জেলা পরিষদের সদস্য ও গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন বাবুলকে আমি চিনি। সে একজন হতদরিদ্র হওয়া সত্বেও সেচ্ছায় মানুষের নিবাপত্তায় বিনা পারিশ্রমিকে এ মানবিক কাজ করছে।
বাবুল হোসেন বলেন, আজ আমি ধন্য ও মহাখুশি। জেলা প্রশাসক মো. শামিম আহমেদ স্যার আমাকে ১০ হাজার টাকার একটি চেক হাতে দিয়েছেন। এজন্য ডিসি স্যারকে অসংখ্য সালাম ও অভিনন্দন এবং আমাকে নিয়ে যারা নিউজ করেছেন তাদেরকে জানাই ধন্যবাদ।
তিনি আরো জানান, রাজাপুর বাজারের ট্রাফিক চত্বরে আমার চোখের সামনে অনেক দুর্ঘটনা সহ প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে এবং ২০০৬ সালে জামরুল নামের কলেজ ছাত্র আমার চোখের সামেেনে গুরতর আহত হয়। তাৎক্ষণিক হাসপাতালে ভর্তি করানোর ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছি তখন। ওই সব দুর্ঘটনা দেখে, মানবতার দৃষ্টিতে উদ্দীপ্ত ও অনুপ্রানিত হয়ে, সেচ্ছায় মানব কল্যানে, সড়ক দুর্ঘটনা এড়ানোর লক্ষ্যে ট্রাফিক পুলিশের কাজে আত্মনিয়োগ করি। তাই আমি এলাাকবাসী ও সকলের দোয়া নিয়ে রাজাপুর বাজারে এ কাজ করে যেতে পারি সেজন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করি।