কবি শতক আরিফ এর ‘ স্বপ্নে দেখা বিধ্বস্ত ঈশ্বর ‘
“স্বপ্নে দেখা বিধ্বস্ত ঈশ্বর”
শতক আরিফ
অবিকল এক ঈশ্বর যেনো দাঁড়িয়ে ঠিক সম্মুখে আমার
ক্ষুধার্ত ঈশ্বরের মুখ চোখ পোড়া
ঝলসে যাওয়া কিছু মায়া মমতার ছড়াছড়ি আপাদমস্তক
বিধস্ত মহিমায় দাঁড়িয়ে উনি সম্মুখে আমার —
যেখানে আমি দাঁড়িয়ে আছি এখন
যেখানে দাঁড়িয়ে আছে আধফাটা পায়ে বিধস্ত ঈশ্বর
তার পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে বাহারী রঙের কান্না নদী
রক্ত নদী, ভক্ত নদী, লীলা নদী –
বয়ে চলেছে ব্যাতিক্রমী এক সভ্য নদীর বিপন্ন স্রোত।
খুতখুতে স্বভাবে বয়ে চলা সেই নদীর স্রোতের শব্দে কত ধর্ষিতা বোনের বোকা কান্না, কত শিশু “মা”দের কাচা যোনির ভয়াবহ আকুতি আর দুনিয়া পোড়ানো নির্মম এক আগুনের ঝলসানি –
সেই নদীতে বয়ে চলেছে ” এক সভ্য পরিবারের বেড়ে ওঠা “ঐশী “মেয়ের মঞ্চ লীলা!
চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকা বিধস্ত ঈশ্বর এবার একটু নড়ে-চড়ে দাঁড়ালেন
উনি চোখ ফেরালেন ডানে বামে কয়েকবার
এবার উনি কন্ঠে তুললেন ধর্মের ধাধায় ধরিত্রী ভরা ফরিয়াদি আমি বড় ফকির
আমার দয়ায় দানব ওরা
ওরা আমার অসভ্য বান্দা
আমি ওদের দিয়েই খেলি।
তারপর, হঠাৎ এক ঝড়ের আভাস
মেঘের গর্জন
তিক্ত সুরে নাজেহাল শব্দ –
টেবিলের ওপরে নিভিয়ে রাখা মাটির পিদিমটা হয়তো পড়ে গেল এবার
মাটির ঘরের ফাটা দেয়ালে লুকিয়ে গেলো মুচকি হাসি –
কেরোসিনের গন্ধে স্বপ্নে পাওয়া আধফাটা পায়ে দাঁড়িয়ে থাকা বিধস্ত ঈশ্বর
বান্দার স্বপ্নে বাস্তবতা হারিয়ে নির্বাক দৃষ্টি –
চোখের সামনে ঘোর অন্ধোকার
স্যাঁতস্যাতে মাটির ঘর।
পৈতৃক সূত্রে পাওয়া নরবড়ে চৌকি
মাথার নিচে তেল চিটচিটে সাত পুরুষের পুরোনো বালিশ
অন্ধকার ঘরে ইঁদুরের দৌড়ানি
দূরুদরু বুকে অক্ষম জীবন –
অতঃপর গামছা পোড়া অবিকল আমি অট্টহাসির মহাগুরু
আমার রাত বাড়েনা এখনো।