নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার জোনাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হক (তোজাম) কতৃক ওয়ার্ড সদস্যদের সম্মানীভাতা আত্মস্বাৎ, দুর্নীতি ও স্বজন প্রীতি করার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ও প্রতিবাদ সভা করেছে ওয়ার্ড সদস্যরা। রবিবার দুপুরে উপজেলার জোনাইল পাগলা বাজারে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ইউপির বিভিন্ন সুবিধাবঞ্চিত সদস্য ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড সদস্য আজমত আলী, ৫নং ওয়ার্ড সদস্য শাকিল আহমেদ, ৬নং ওয়ার্ড সদস্য মহরম আলী মৃধা, ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত সদস্য সফুরা বেগম, ১,২,৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত সদস্য আবেছা বেগম, গণমাধ্যম কর্মী সহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। উল্লেখ্য, গত এপ্রিল মাসে উপজেলার জোনাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও অর্থ আত্মসাৎতের অভিযোগ উঠে সংবাদ প্রচার হয়।
পরিষদের কয়েকজন সদস্য এসব অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এর প্রতিকার চেয়ে বুধবার ইউপি সদস্যরা সচিব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় , নাটোরের জেলা প্রশাসক ডিসি, বড়াইগ্রামের ইউএনও, ও উপজেলা চেয়ারম্যান সহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগকারীরা হলেন,ইউপি সদস্য সেলিম হোসেন, দুলাল হোসেন,মহররম হোসেন ,আজমল হোসেন,শাকিল আহম্মেদ,আবেদা বেগম,জামিরুন বেগম,সফুরা বেগম। লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ইউপি চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হক এবং সচিব সন্জয় কুমার চাকীর যোগসাজশে গত ৫ বছর ধরে ইউপি সদস্যদের সম্মানীভাতা বাবদ ৩২ লাখ টাকা প্রদান না করে মাসিক মিটিং এর রেজুলেশন বইতে স্বাক্ষর করে নিয়েছেন ।
সম্মানী ভাতা দেবো দিচ্ছি বলে ৫ বছর ঘুরানোর পর চলতি বছরের জানুয়ারী মাসে মাসিক মিটিং এ ইউপি চেয়ারম্যন সাফ জানিয়ে দেন সম্মানীভাতা দিতে পারবেন না । এছাড়া গত ৫ বছরে টিআর,কাবিখা,জিআর বরাদ্দসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে ইউপি সদস্যদের নামকেওয়াস্তে বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি বানিয়ে তাদের না জানিয়ে ভূয়া স্বাক্ষর করে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন । এলজিএসপি প্রকল্পে অতি নিুমানের কাজ করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন ।শুধু তাই নয়, রাজস্বখাতের হোল্ডিং ট্যাক্স,জন্ম ও মৃত্যু সনদ,ওয়ারিশন সনদ থেকে প্রাপ্ত অর্থসহ ইউনিয়ন পরিষদের ৪ বছরের পুকুর লিজ এবং দোকান ভাড়ার টাকা পরিষদের তহবিলে জমা না দিয়ে সচিব সন্জয় কুমার চাকির সহযোগীতায় ৮০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন । এছাড়া চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হক ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ভিজিডি সুবিধাভোগীদের বন্ধু চুলা দেওয়ার কথা বলে ৩০৯ জনের কাছ থেকে ৭০০ টাকা করে মোট দুই লাখ ১৬ হাজার ৩০০ শ টাকা আদায় করে ।
আজ পর্যন্ত কাউকেই চুলা বা টাকা ফেরত দেননি ইউপি সদস্যদের না জানিয়ে প্রকল্প গ্রহণ করে অর্থ আত্মসাৎ ইউনিয়ন পরিষদের ট্যাক্সের অর্থ আত্মসাৎ, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন বাবদ অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ ও হয়রানি করে আসছেন।ইউপি সদস্যরা তার এই সব দুর্নীতির প্রতিবাদ করতে গেলে, তিনি তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। হুমকি ধামকিও দেন। ইউপির একাধিক সদস্য জানান,আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি।আমাদের সম্মানী তো দেয়না চেয়ারম্যানের দূর্ণিতি ,অনিয়ম,অর্থ আত্মসাৎ করছেন । তাঁর কারণে জনগণের প্রাপ্য আমরা জনগণকে দিতে না পারায় তারা আমাদের ওপর ক্ষুব্ধ হচ্ছেন। এর একটা সুষ্ঠু প্রতিকার হওয়া উচিত। ইউপি সদস্য সফুরা বেগম জানান, ইউপি সদস্য মহররমের কথায় সম্মানী ভাতার জন্য আবেদনে স্বাক্ষর করেছি । এরপর থেকেই পরিষদের সকল সুবিধা থেকে বঞ্চিত অভিযোগকারী ওয়ার্ড সদস্যরা। সংবাদ সম্মেলনে ওয়ার্ড সদস্যরা প্রশাসনের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে সমস্যার সমাধান দাবী করেছেন।