নলডাঙ্গা, নাটোর নিউজ: নাটোরের নলডাঙ্গার কামারশালা গুলো এখন মুসলমানদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ধর্মীয় উৎসব ঈদ উল আযহাকে সামনে রেখে হাতুড়ি আর লোহার টুং টাং শব্দে মুখরিত। টানছে হাপর,পুড়ছে কয়লা,জ্বলছে লোহা।
হাতুড়ির আঘাতে তৈরী হচ্ছে দৈনন্দিন জীবনে কাজের উপযুক্ত সামগ্রী হাসুয়া,কাছি,দা,বটি,ছুরি,চাপাতিসহ ধারালো সব যন্ত্রপাতি। তাই কয়লার চুলায় দগদগে আগুনে গরম লোহার পিটাপিটিতে টুং টাং শব্দে মুখর হয়ে উঠেছে,নাটোরের নলডাঙ্গার কামার শালাগুলো। আর সামনে আগুনের শিখায় তাপ দেয়া হাতুড়ি পেটানোর টুং টাং শব্দে তৈরি হচ্ছে দা-বটি, চাপাতি ও ছুরি।
তাই যেন দম ফেলার সময় নেই কামারদের। নাওয়া-খাওয়া ভুলে দিন রাত কাজ করছেন কামাররা। কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছেন তারা। সারা বছর তেমন কাজ না থাকলেও কুরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে কয়েকগুণ ব্যস্ততা বেড়ে যায় কামারদের। কয়েকজন কামারের সাথে আলাপ করে জানা যায়,পশুর চামড়া ছাড়ানো ছুরি ৬০ থেকে ৭০ টাকা,দা ৩৫০ থেকে ৪০০টাকা,বটি ৪০০-৪৫০- ৫০০টাকা কেজি,পশু জবাইয়ের ছুরি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি,চাপাতি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, আসন্ন কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে অনেক ব্যস্ত সময় পার করছেন কামাররা। পশু জবাইয়ের সরঞ্জামাদি কিনতেও লোকজন ভিড় করছেন তাদের দোকানে। আগে যে সব দোকানে দুজন করে শ্রমিক কাজ করতো,এখন সে সব দোকানে ৩-৪ জন করে শ্রমিক কাজ করছেন। শ্রমিকেরা কাজ করছেন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়।
উপজেলার বাঁশভাগ গ্রামের বিশ্বনাথ কামার ও নরেশ কুমার বলেন, কুরবানির ঈদ উপলক্ষে আমাদের বেচা কেনা দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। তবে ঈদের দুই দিন আগে থেকে রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা বেচাকেনা হবে। তখন আমাদের খাওয়ার সময়ও থাকে না। ঈদ ও পাট কাটার সময়ের জন্য কাজের চাপ বেশি। কাজের চাপে কখন খাওয়ার সময় চলে যাচ্ছে আমরা টেরও পাই না।
ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে আমাদের বিক্রি তত বাড়ছে। বিপ্রবেলঘরিয়ার ইউ,পির রনজিৎ কামার বলেন, সারা বছর কাজ কম থাকে। কুরবানির ঈদ এলে আমাদের কাজ বেড়ে যায় কয়েক গুণ। ছুরি শান দেওয়ার জন্য ২০ টাকা থেকে শুরু করে কাজের গুণাগুণের উপর ভিত্তি করে ১০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। ব্রহ্মপুর ইউ,পির খোজেদ আলী কামার বলেন,প্রায় ৩০ বছর যাবৎ এ কাজ করে যাচ্ছেন তনি।
তিনি জানান ঈদ আসলে ব্যস্থতা একটু বাড়ে। ঈদকে সামনে রেখে,এখন পর্যন্ত তিনি-৩শ পিস চাপাতি,৫শ পিস ছোট ছুরি,দেড়শ পিস বড় ছুরি ও বটি ২৫০ পিস তৈরি করেছেন।