জুটেনি একটা চাকুরী, অন্যের জমিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা মারফত আলীর পরিবারের বসবাস
রাজু আহমেদ, সিংড়া, নাটোর নিউজ: নাটোরের সিংড়া উপজেলার পুন্ডুরী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মারফত আলীর ছেলে মিঠু চাকুরির জন্য হন্য হয়ে ঘুরে নিরুপায়। তাঁর স্ত্রী, দু কন্যা কে নিয়ে বসবাস করেন অন্যের জায়গায়। দিন আনে দিন খায় এমন অবস্থায় দিনাতিপাত করছে তাঁর পরিবার। মুক্তিযোদ্ধা মারফত আলী ও তাঁর স্ত্রীর মূত্যুর পর পুন্ডুরী মসজিদের পাশে এক টুকরা জমিতে বসবাস করে আসছেন পুত্র মিঠুর পরিবার।
সম্প্রতি পুন্ডুরী দাখিল মাদ্রাসার নিয়োগে আয়া পদে মিঠুর স্ত্রী আবেদন করে। গত শুক্রবার কলম উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তহুরা নামে একজন প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ।
জানা যায়, মারফত আলীর ৫ কন্যা ও দু পুত্র রেখে গেছেন। সে প্রকৃত একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। শেষ জীবনে ও তিনি চানাচুর বিক্রি করে সংসার চালান। পরে মুক্তিযোদ্ধা ভাতায় সংসার চালান তিনি। বর্তমানে ২ ভাই ও ৫ বোন এ ভাতা গ্রহন করছেন। প্রায় তিন বছর আগে পুন্ডুরী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী পদে মিঠু আবেদন করে। কিন্তু তাঁর চাকুরী হয়নি। এবার আয়া পদে তাঁর স্ত্রী আবেদন করে ও চাকুরী না হওয়ায় এ প্রতিবেদককে পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন মিঠু ও তাঁর স্ত্রী।
কান্না জড়িত কন্ঠে মিঠু জানান, আমার বাবা সারাজীবন কষ্ট করে গেছেন। আমিও অন্যের জমিতে কাজ করে সংসার চালাই। আমার দু মেয়ে। বড় মেয়ে মৌ ক্লাস সেভেনে পড়ে। ছোট মেয়ে মাহিমা বয়স ৬ মাস। তাঁর জন্মের পর নাড়িতে সমস্যা হওয়ায় এলাকার মানুষের সহযোগিতায় ৫০/৬০ হাজার টাকা খরচ করে সুচিকিৎসা করানো হয়।
মিঠুর স্ত্রী জানান, তাঁকে সুপার ও স্থানীয় এক নেতা ডেকে নিয়ে বলেছিলো তিন লাখ টাকা দিলে চাকুরির ব্যবস্থা করে দেয়া হবে। পরে শুনি তহুরা নামে একজনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক আওয়ামী লীগের নেতা জানান, গুটি দু একজন নেতা সবাইকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিএনপির পরিবারের দু জনকে কম্পিউটার অপারেটর ও আয়া পদে চাকুরী দিয়েছেন। এতে করে এলাকায় ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এবিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মঈনুল হক চুনু জানান, মারফত আলীর পরিবার অসহায় পরিবার। চাকুরী তাদের পাওয়া দরকার ছিল। নিয়োগের বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। পরে শুনতে পেয়েছি অন্য জনের চাকুরী হয়েছে।
মিঠুর পরিবার প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও অত্র ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসির উদ্দীন, সুপারের কাছে বারবার ঘুরে ও কোনো ফল পায়নি।
একটা চাকুরির জন্য আর কত কাঁদতে হবে মুক্তিযোদ্ধা মারফত আলীর পরিবারের। অসহায় এ পরিবারের চাকুরির জন্য স্থানীয় শত শত মানুষ মাননীয় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপির আশু সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।