খনন করা পুকুরের মাটিতে পাকা সড়কের সর্বনাশ
——————————————————————–
শুধু সিংড়া উপজেলাতেই প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।। একইভাবে কমবেশি নাটোর জেলার অন্য
উপজেলাগুলোতেও ক্ষতি হচ্ছে পাকা সড়কের। অনেক জায়গায় হুমকির মুখে পরেছে গ্রামীন সড়ক।
” সরকারী সড়কের ক্ষতিসাধন করলে দুই বছরের জেল বা জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে। ” কিন্তু আইন আছে- প্রয়োগ নেই। সড়ক রক্ষণাবেক্ষনের দায়িত্বে নিয়োজিত নাটোর সড়ক জনপথ বিভাগ এবং এলজিইডি কর্তাব্যক্তিদের বেশির ভাগেরই এই আইন সম্পর্কে নূন্যতম ধারণা নেই।
তাই এ বিধি উল্লেখ করে স্থানীয় সরকার বা সড়ক জনপথ বিভাগ মাটি ব্যবসায়ী বা ভাটামালিকদের নোটিশ দিয়ে সতর্ক করেননি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার ফলে, বেওয়ারিশ সড়ক মনে করে যাচ্ছেতাই ভাবে মাটি পরিবহণ করা হয়েছে। ফলে খনন করা পুকুরের মাটি রাস্তায় পরে বিটামিনের গুনাগুন নষ্ট করে ফেলেছে। সামান্য বৃষ্টিতেই পিচ ঢালাই সড়ক উঠে খানা খন্দকে পরিণত হচ্ছে। গ্রামীণ সড়ক হয়ে গেছে মেঠোপথ। যানবাহনের চাকা পিছলে ঘটছে অহরহ দূর্ঘটনা। শুধু শস্যভান্ডার খ্যাত চলনবিলের সিংড়া উপজেলায় পুকুর খনন ও মাটি পরিবহণের কারণে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সরকারী সড়ক নষ্ট হয়ে গেছে। আরও অনেক সড়ক হুমকির মুখে পড়েছে।
জেলার অন্য ৬ টি উপজেলাতেও গণহারে পুকুর কাটা ফলে রাস্তার ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গেছে।
পাকা সড়ক দিয়ে পুকুর কাটা মাটি পরিবহণের মাধ্যমে রাস্তার ক্ষতি করার অপরাধে কাউকে যেমন নোটিশ দিয়ে সতর্ক করা হয়নি। তেমন কাউকে জেল বা জরিমানা গুনতে হয়েছে বলে শোনা যায়নি। ফলে,অধিকাংশ মাটি ব্যবসায়ী সরকারী সম্পদ গ্রামীণ সড়কগুলোকে নিজেদের বাপদাদার সম্পদ ভেবে যাচ্ছেতাই ভাবে ব্যবহার করেছে। নিজেদের বানিজ্যক প্রয়োজনে মাটি পরিবহণ করে নিয়ে গেলেও রাস্তায় পরা মাটি অপসারণ করা প্রয়োজন মনে করেনি। জনভোগান্তি বা রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি হলে তাদের কি? জনগণের প্রতি বা রাষ্ট্রের প্রতি তাদের কোন দায়বদ্ধতা নেই। দায়বদ্ধতা থাকলে তারা রাস্তা পরা মাটি অপসারণ করতো এবং রাস্তা ধুয়ে মুছে পরিস্কার রাখতো।
নামপ্রকাশে অঅনইচ্ছুক একজন প্রকৌশলী জানান,জেলার অধিকাংশ ভাটা মালিক প্রভাবশালী এবং সরকারী দলের রাজনীতির সাথে জড়িত। তাই অনেককে বলার পর ও ক্ষমতার দম্ভে তারা রাস্তার মাটি অপসারণ করেননি। ফলে যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গেছে। নিয়িমিত রাস্তার পরা মাটি অপসারণ করলে ক্ষতি কম হতো। কিন্তু সেটা না করার কারণে বৃষ্টিতে পুরো রাস্তায় মাটি পেষ্ট হয়ে বিটুমিন কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে৷ পাথড় উঠা শুরু হয়েছে। জেলায় সবচেয়ে বেশি পাকা সড়ক নির্মান এবং সংস্কার হয়েছে সিংড়া উপজেলাতে। শুধু এই একটি উপজেলায় সড়কের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫০ কোটি টাকা।
সিংড়া উপজেলা এলজিইডির উপ সহকারী প্রকৌশলী গোলাম হোসেন জানান,গ্রামীণ সড়কগুলোতে পরা মাটি অপসারণ করার জন্য ভাটা মালিক এবং মাটি ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে নোটিশ দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য এলজিইডি নাটোরের প্রধান প্রকৌশলীর মুঠোফোনে বারংবার কল দেওয়ার পর ও তিনি রিসিভ করেননি।