জলশূন্য ঘটি
অমল বিশ্বাস
নিশ্চিন্তে চোখ মেলছিলো রঙ্ধনুর মতো কিশোরী পাপড়ির দল। হঠাৎ একদিন বিষবৃষ্টির পাথুরেচাপে ছিঁড়ে পড়লো সব ফুলের বোঁটা। একদল বিষাক্ত মৌমাছি তছনছ করে দিলো ফুলের বাগান। ধাক্কা খেয়ে মালিনী পড়ে রইলো ঝরা ফুলের রক্তাক্ত বিছানায়। আজ আর মালি জল দিয়ে ধুলোবালি মাখা ইন্দ্রাণীর অপরাজিতাকে সতেজ করতে আসেনি। ঘরের কোণে বসে কাঁদতে-কাঁদতে একসময় সে পাথর হয়ে গেল।
হঠাৎ প্রচণ্ড বাতাসে মালিনীর সাথে ঝরা ফুলের দল ঢুকে পড়লো মালির ঘরে। পাথরকে জড়িয়ে বললো, “তুমিও কি ত্যাগ করবে এই সমাজচ্যুতদের!” পাথর তাদেরকে নিয়ে অছ্যুৎ সমাজ ছেড়ে আশ্রয় নিলো হিমালয়ের চূড়ায়। সেই থেকে সে বরফগলা জলের স্রোতে আজও ভাসাচ্ছে ক্ষতবিক্ষত ফুলের অবাঞ্ছিত রক্তের দাগ। তবুও পুষ্প-কিশোরীরা সমাজের কাছে অছ্যুৎ রয়ে গেছে। উপুড় হয়ে আছে মালীর জলশূন্য ঘটি।