নাটোর নিউজ: নাটোরে থানা হেফাজতে আসামী নির্যাতনের অভিযুক্ত সেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজিব এবং লালপুর থানার সেই অফিসার ইনচার্জ উজ্জল হোসেন নির্বাচিত হয়েছেন সেরা পুলিশ কর্মকর্তা।
গত ২৩ জুলাই পুলিশ লাইন ড্রিল সেডে পুলিশ কল্যাণ সভায় সেরা সার্কেল কর্মকর্তা হিসাবে শরীফ আল রাজিব এবং সেরা ওসি হিসাবে লালপুর থানার সেই অফিসার ইনচার্জ উজ্জল হোসেনের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন নাটোরের পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমান।
উল্লেখ্য, গত ১৩ জুলাই অটোরিকশা ছিনতাই মামলায় ৩ আসামিকে আদালতে তোলা হলে জবানবন্দিতে তারা ৫ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে নির্যাতনের বর্ণনা দেন। পরে লালপুর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোসলেম উদ্দীন অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য নাটোরের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন।
অভিযুক্ত ৫ জনের মধ্যে লালপুর থানার ২ জন উপপরিদর্শক ও একজন কনস্টেবলও রয়েছেন।
এর পর ১৬ জুলাই রিভিশন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা দায়রা জজ মো. শরীফউদ্দীন মামলার আদেশ স্থগিত করেন। রিভিশনের পরবর্তী শুনানির তারিখ ২৬ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করেন বিচারক।
এদিকে থানা হেফাজতে আসামীদের নির্যাতন এবং তিনিদিন ধরে আটকে রাখার ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের এমন পুরষ্কার দেয়ার ঘটনাকে অপরাধকে প্রশ্রয় দেয়ার শামিল বলছেন নাটোরের সচেতন মহল।
দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির নাটোর জেলা সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রত্যেক মানুষরেই আইনগত অধিকার আছে। যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালত কতৃক থানা হেফাজতে আসামীদের বিরুদ্ধে নির্যাতন এবং ২৪ ঘন্টার বেশি থানায় আটকে রাখার অভিযোগ উঠলো। তাদেরকে পুরষ্কার দেয়া একদিকে যেমন অপরাধে উৎসাহিত করা বলেই মনে করি। এমন ঘটনা ঘটলে সমাজে বিরুপ প্রভাব পড়ে। এমন কাজ পুলিশ কর্তৃপক্ষের কোনভাবেই করা উচিত নয়।
এদিকে সুশানের জন্য নাগরিক (সুজন) কমিটির নাটোর জেলার সাধারণ সম্পাদক এড. মো. আব্বাস আলী বলেন, অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের শ্রেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা হিসাবে পুরষ্কার দেয়ার অর্থ হলো তাদেরকে উৎসাহিত করা। অভিযুক্তরা তো শাস্তি পেলোই উল্টো পুরস্কৃত হলো। এতে অন্যান্য পুলিশ মেসেজ পেলো যে এমন ঘটনা ঘটালোও কোন শাস্তি হবে না।
তবে নাটোরের পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহামন বলেন, যেসব পুলিশ কর্মকর্তাদরে বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল সেটা সঠিক নয়। তাছাড়া একদিনের কোন কাজের বিবেচনায় নয বরং সারা মাসের কাজের মূল্যায়ন করে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের মার্কিংয়ের উপর ভিত্তি করে পুরষ্কার দেয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (প্রশাসন) রশীদুল হাসান জানান, তিনি বিষয়টি জানেন না এবং তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।