নাটোর নিউজ গুরুদাসপুর: নাটোরের গুরুদাসপুরে গ্রামের সহজ সরল হত দরিদ্র পরিবারের গৃহবধু নাসিমা ২৬ (ছন্ম নাম)। দরিদ্র শ্রমিকের ঘরে সুখেই চলছিলো তাদের সংসার। সেই সুখের সংসারে আগুন ধরালেন গ্রামের প্রভাবশালী দেলু মোল্লার ছেলে রাজু ২২। বিয়ের প্রলোভনে একাধিকবার শারিরিক সম্পর্ক করে ধরা খেলেন স্বামীর হাতে। সেই ঘটনাকে আড়াল করতে গ্রামের মাত্বরদের বিশেষ সুবিধা দিয়ে শালিস করেন দেলু মোল্লা ও তার ছেলে রাজু।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ধারারিষা ইউনিয়নের বিন্যাবাড়ি বাজার এলাকায়। গ্রামবাসি ও ভুক্তভোগির পরিবার সুত্রে জানাযায়, তিন বছর যাবত বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার শরিরিক সম্পর্ক করেন গ্রামের প্রভাবশালী ধনির দুলাল রাজু। গত ২৯ জুন বুধবার রাতে স্বামী মনিরের বাসায় ফিরতে দেরি হয়। সেই সুযোগে লম্পট রাজু ওই নারীর কাছে যায়। এক পর্যায়ে গৃহবধুর স্বামী শ্রমিকের কাজ শেষে বাসায় ফিরে ঘরের দরজায় নক করতে থাকে। দরজা খুলতে দেরি দেখে দরজায় লাথি মারে তখন লম্পট রাজু দরজা খুলে গৃহবধুর স্বামী মনিরকে ধাক্কা দিয়ে দৌড়ে পালায়। অতপর নিরুপায় স্বামী সমাজের ভয়ে তার স্ত্রীকে বাসা থেকে বেড় করে দেয়। উপায়ান্ত না পেয়ে ৩০ জুন বৃহস্পতিবার রাতে ওই গৃহবধু রাজুর বাসায় যায়। তাকে মারধর করে বাসা দেখে বেড় করে দেবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে গ্রামের প্রধান সাবেক ইউপি সদস্য ছায়েদ আলী, বিএনপি নেতা হকবেল, আজাহার মেম্বর, আব্দুল বারিসহ দশ জন প্রধানকে ডেকে মাত্র ৭০হাজার টাকা দিয়ে সাদা স্ট্যাম্পে সই নিয়ে তা মোবাইল ফোনে ধারণ করে রেখে বিচার কার্য শেষ করেন।
সরেজমিনে গিয়ে প্রতিবেশি ও গৃহবধু নাছিমাকে জিজ্ঞাসা করলে বলেন, আমরা গরিব বাবাটিও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধি। আমার বাবা এবং আমাকে ভয়ভিতি দেখিয়ে রাজু, তার বাবা দেলু মোল্লা ও প্রধানরা ৭০ হাজার টাকা হাতে দিয়ে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে ভিডিও ধারন করে আমাদেরকে বাসা থেকে বেড় করে দেয়। এই বিচার না মানলে তাদের জেল হাজতে পাঠানোর হুমকিও দেন। গৃহবধুর স্বামী মনির হোসেন জানান, আমি দিন মজুরী করে অতি কষ্টে সংসার চালাই। নিজ চোখে ওই দৃশ্য দেখে সমাজের মানুষের চাপে বাড়ি থেকে বেড় করে দিয়েছি। এখন আবার নিলে সমাজের মানুষ আমাদের এক ঘরে করে রাখবে। ওই এলাকার রাজিবুল ইসলাম জানান, রাজু এর আগেও এক গৃহ বধুর জীবন নষ্ট করেছে। মাঝে মধ্যেই সে মেয়েদেরকে বিরক্ত করে। এসব বলার পরেও দেলু মোল্লা তার ছেলেকে বিয়ে দেন না উল্টো টাকার গরম দেখান। অভিযুক্ত বাজুর বাবা দেলু মোল্লা জানান, তার ছেলের ভুলের জন্য এলাকার প্রধানরা যে বিচার করে দিয়েছে আমি সেটা মেনেই মিমাংসা হয়েছি।
গ্রাম্য প্রধান সাবেক ইউপি সদস্য ছায়েদ আলী বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করলেও নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক প্রধান বলেন যা করা হয়েছে তা দুই পক্ষের সম্মতিইে করা হয়েছে। তবে স্ট্যাম্প আর ভিডিওর বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। ধারাবারিষা ইউপি চেয়াম্যান আব্দুল মতিন জানান, বিষয়টি আমি অবগত নই। তবে বিচার কার্য কেউ করে থাকে সেটা ঠিক হয়নি। গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) মোঃ আব্দুল মতিন বলেন গ্রাম্য শালিসের বিষয়টি শুনেছি । এখনো কোন অভিযোগ পাইনি, পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।