নাটোর নিউজ লালপুর: সরকারী নিয়ম তোয়াক্কা না করে ও স্থানীয় প্রশাসনের যোগসাজশে প্রকাশে দিবালোকে এবং রাতের অন্ধকারে নাটোরের লালপুর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ফসলি জমিতে মাটি উত্তলোনের মধ্য দিয়ে পুকুর খননের মহোৎসব চলছে। আর এসব পুকুরের মাটি যাচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়। এতে শত শত বিঘা ফসলি জমি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে আবাদি জমির উর্বরতা হারিয়ে অনাবাদি হয়ে পড়ছে। কমতে শুরু করেছে ফসলের উৎপাদন এবং হুমকির মুখে পড়েছে ফসলি জমি। এছাড়া মাটি ভর্তি ও খালি ট্রাক্টর ও ট্রাক চলাচলের কারণে গ্রামীণ কাঁচ-পাকা সড়ক নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
ইটভাটায় মালিকরা ও মাটি ব্যবসায়ীরা কৃষকদের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে ভেকু মেশিন দিয়ে তিন-চার ফসলি জমির মাটি কেটে নিচ্ছে তারা।এছাড়া স্থানীয় প্রশাসন ও থানা পুলিশকে উৎকোচ মাধ্যমে তাদের ম্যানেজ করে পুকুর খনন করে ইটভাটায় মাটি বিক্রয়ের হিড়িক লাগিয়েছে ভূমিদস্যুরা বলে অভিযোগ তুলেছে স্থানীয়রা।
জানা গেছে, উপজেলার লালপুর সদর, ঈশ্বরদী, এবি, আড়বাব, বিলমাড়ীয়া, দুড়দুড়িয়া, চংধুপইঁল, ওয়ালিয়া, দুয়ারিয়াসহ কদিমচিলান ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় ফসলি জমি থেকে মাটি কাটার মহোৎসব চলছে। কিছু এলাকায় দিবালোকে ও বেশির ভাগ এলাকায় রাত ১০টা থেকে শুরু করে ভোর রাত পর্যন্ত প্রায় ৩০ থেকে ৩৫টি স্থানে ফসলি জমির মাটি কেটে ট্রাক ও ট্রাক্টর দিয়ে নিয়ে ইটভাটায় ইট তৈরি সহ বিভিন্ন স্থাপনার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৩২টি অবৈধ ইটভাটা আছে বলে জানা গেছে। এসব ইটভাটায় ইট তৈরির কাজে মাটির চাহিদা পূরণ করতে কৃষি জমি থেকে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। এতে ফসলি জমি কমে যাওয়ায় খাদ্য ঘাটতির আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে সচেতন মহল জানান, ফসলি জমিতে পুকুর খনন করতে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের যে সকল সদস্যরা জড়িত আছে তাদের সহ ভূমি দস্যুদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ও গোপনে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সহ ভূমি মন্ত্রীর সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
এ বিষয়ে উপজেলার বিশম্বপুর গ্রামের কৃষক সোলেইমান হোসেন বলেন, আম বাগান কেটে ভেকু দিয়ে পুকুর খনন করে মাটি কেটে নিয়ে ইটভাটায় সহ রাস্তা নির্মাণের কাজে ব্যবহারের জন্য ঠিকাদারের নিকট বিক্রয় করছে রুবেল ও শয়কত আলী। অথচ প্রশাসন তাদেরকে মাটি খনন করতে বাঁধা সৃষ্টি করছে না এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ফসলি জমিতে পুকুর খনন করা নিষিদ্ধ। তবে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় কে অবগত করবো বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি শাম্মী আক্তার বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।