নাটোর নিউজ সিংড়া: নাটোরের সিংড়ার ভাগনাগরকান্দি গ্রামের কৃষক পরিবারের সন্তান সবুজ আলী। উচ্চ শিক্ষিত হয়েও কৃষি ও মাটির প্রতি টান তাঁকে একজন সফল কৃষক হিসেবে প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন তাঁকে বারবার নাড়া দিতো। এই স্বপ্নে বিভোর হয়ে তিনি গড়ে তুলেছেন ময়নামতি এগ্রোঃ লিঃ। ৬০ একর জমিতে গড়েছেন
নানা প্রজাতির সবজি। এলাকায় অনেকে বেকারত্ব দুর করার পাশাপাশি উন্নতের জাতের ধান, টমেটো, পিয়াজ, মরিচ চাষে সফল কৃষক এবং সফল উদ্দোক্তা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পেঁয়াজ চাষে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। ইন্ডিয়ান সুখসাগর জাতের পেঁয়াজ চাষ করা হচ্ছে। এ জাতের পেঁয়াজ দেশী জাতের তুলনায় চারগুন বেশী ফলন হয় যা ৩৩ শতকের বিঘাতে প্রায় ২০০মন। এ পেঁয়াজ বাংলাদেশের মেহেরপুর জেলায় ব্যাপক চাষাবাদ হয় এবং সেখান থেকে বীজ সংগ্রহ করে সিংড়ায় প্রথম চাষ করা হচ্ছে। এবার জ্বালানি তেল ও সারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়ে গেছে উৎপাদন খরচ। তারপরও পেঁয়াজ আবাদ চলছে উৎসবমুখর পরিবেশে। কৃষি শ্রমিকরা সকাল ৮ টার আগেই মাঠে হাজির হচ্ছেন। সাত সকালেই শ্রমিকদের পদচারণায় মুখর ভাগনাগরকান্দী গ্রামের সড়ক কিংবা মেঠোপথ।
সার্বিক তত্বাধায়ক সবুজের আরেক ভাই শামীম হোসেন তিনি বলেন, গ্রামে পেঁয়াজ, টোমেটো, ধান ইত্যাদি ফসল চাষ করার ফলে প্রতিদিন প্রজেক্টে ৪০থেকে ৫০জন নারী এবং পুরুষ শ্রমিকরা নিরলশ পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
ময়নামতি এগ্রো লিঃএর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: সবুজ আলী বলেন, পাঁচ বছর মেয়াদি একটি প্রেজেক্টে ২০২১-২২ অর্থবছরে ২য় বছরের মত উৎপাদন হচ্ছে, ধান, পেঁয়াজ, ভুট্টা,পেঁয়াজের বীজ, টোমেটো,মিস্টি কুমড়া,স্কোয়াস, ক্যাপসিকাম মরিচসহ ইত্যাদি জাতীয় ফসল উৎপাদন করছি। যাহা ভবিষ্যতে কৃষি নির্ভর শিল্প এই সিংড়ার বুকেই তৈরী হবে ইনশা আল্লাহ। বর্তমান বাজারে টোমেটো এবং পেঁয়াজের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় মুল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই বিভিন্ন বাজারের পাইকাররা জমি থেকেই পাইকারি মুল্যে পন্য ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে ফলে আমাদের পরিবহন খরচ কমে গেছে।
তিনি আরো বলেন যে, পণ্য উৎপাদনের তুলনায়, পণ্যের চাহিদা বাড়ায়, নিজ উপজেলার চাহিদার যোগান দিয়ে জেলার বাহিরে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় উৎপাদন ও বিক্রয় মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় কয়েক লক্ষাধিক টাকা লাভ হবে বলে জানান তিনি ।
তিনি আরও জানান একক উদ্যোগে এ সকল নিরাপদ ফসল উৎপাদন করছি, যদি পাশাপাশি কেউ উদ্যোগ নিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ এবং বৈদেশিক বাজারে সরবরাহ করে তাহলে হয়তো বৈদেশিক ভাবে অধিক লাভবান হওয়া যাবে সেদিন হয়তো বেশী দুরে নয় যেদিন বিদেশের বাজারে আমাদের সিংড়ার তৈরী ফসলসহ যেকোন পণ্য দাপিয়ে বেড়াবে।
উপ- সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রায়হান উদ্দিন জানান, সিংড়া উপজেলা কৃষি অফিস তাদেরকে সব সময় সার্বিক সহযোগীতা করে আসছে এবং মাঠ পরিদর্শন করে ফসলের অবস্থান দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হচ্ছে।