নাটোর নিউজ বড়াইগ্রাম: এক সঙ্গে জন্ম নিয়েছিল চার কন্যা সন্তান। তাদের মধ্যে অপরিণত একটি শিশু মারা গেলেও তিনটি সন্তান সুস্থ-সবল হওয়ায় বাবা-মায়ের মন ছিল আনন্দে উদ্বেলিত। কিন্তু কয়েকদিন যেতে না যেতেই তাদের সে আনন্দ বিলীন হতে চলেছে। নাড়িছেঁড়া ধন প্রিয় সন্তানদের প্রতিদিনের দুধ, ওষুধ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন দিনমজুর বাবা। এতে চরম হতাশায় দিন কাটছে নবজাতক সন্তানের বাবা-মায়ের।
জানা যায়, উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের গৃহবধু লাভলী খাতুন (২৮) গত ২৪ নভেম্বর সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে এক সঙ্গে চার কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। লাভলী খাতুন ওই গ্রামের দরিদ্র ঢালাই শ্রমিক লিটন উদ্দিনের স্ত্রী। তিনটি সন্তান পেয়ে বাবা-মা খুশি হয়ে নাম রেখেছেন লাবণ্য, লামিশা ও লাবিবা।
স্থানীয়রা জানান, পৈত্রিক সুত্রে প্রাপ্ত দুই শতক জমিতে একটি ঘর তুলে তাতে বসবাস করেন লিটন ও লাভলী দম্পতি। জীবিকার তাগিদে ঢালাই শ্রমিক হিসাবে কাজ করতেন। কিন্তু গত বছর ছাদে উঠার সময় সিমেন্টের বস্তাসহ নীচে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান। চিকিৎসায় সুস্থ হলেও আগের কাজ আর করতে পারেন না। বর্তমানে দিনমজুরের কাজ করে কোন রকমে জীবন কাটাচ্ছেন। সংসারে আগে থেকেই তাদের লিমন হোসেন (১৫) ও লিজা খাতুন (৭) নামে দুই সন্তান রয়েছে। প্রাত্যহিক জীবনে এমনিতেই অভাব যেন নিত্য সঙ্গী তাদের। তার উপর আরো তিনটি সন্তানসহ সাত সদস্যের সংসার চালাতে তাদের একেবারে দিশেহারা অবস্থা।
লিটন উদ্দিন জানান, অপারেশনে খরচ পড়েছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। বর্তমানে তিন সন্তানের দুধ, স্ত্রীসহ বাচ্চাদের ওষুধ ও অন্যান্য সামগ্রী কিনতে প্রতিদিন গড়ে ৬০০-৭০০ টাকা খরচ পড়ছে। সারাদিন দিনমজুরের কাজ করে ৪৫০ টাকা পান। এ সামান্য আয়ে তিনি কোনভাবেই প্রতিদিনের খরচ মেটাতে পারছেন না। আবার সবদিন কাজও জুটে না। ফলে দোকান বাঁকিসহ প্রতিদিনই ঋণের অঙ্ক বেড়ে যাচ্ছে।
ইউএনও মারিয়াম খাতুন জানান, এ ব্যাপারে কি করা যায় তা দেখবো। তবে দরিদ্র বাবা-মায়ের সন্তান তিনটি যেন সুন্দরভাবে বেড়ে উঠতে পারে সেজন্য সমাজের স্বচ্ছল মানুষদেরকে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।