ডাক্তার খেয়ে ফেলছে সরকারি জলাশয়
মাহাবুব খন্দকার, নাটোর নিউজ:জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের বিপরীতে, নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের পাশে জলাশয়ে বালু দিয়ে ভরাট করে দখল করছে স্থানীয় একজন ডাক্তার। প্রশাসন বলছেন অবৈধভাবে জলাশয় ভরাট কারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে স্থানীয়দের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে বিষয়টির সত্যতা খুঁজে পায় নিউজ টুয়েন্টিফোর এর এই প্রতিবেদক। ট্রাক থেকে বালু ঢেলে দেবার পরে ৫/৬ জন শ্রমিক সেই বালু দিয়ে জলাশয় ভরাট করছিল এমনটাই দেখতে পাওয়া যায়। এ বিষয়ে জলাশয় ভরাটকারীর সঙ্গে প্রতিবেদক কথা বলতে চাইলে তিনি কথা বলতে চাননি।
জেলা জজ কোর্টের জেনারেল প্রসিকিউটর আলহাজ্ব মো. আসাদুল ইসলাম জানান, ‘জলাধার সংরক্ষণ আইন ২০০০-এর ৩৬ ধারা অনুযায়ী কোনো পুকুর, জলাশয়, খাল, লেক ভরাট করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। পরিবেশ সংরক্ষণ আইনেও নিষিদ্ধ।
বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০)-এর ৬ (ঙ) অনুযায়ী, জাতীয় অপরিহার্য স্বার্থ ছাড়া কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সরকারি বা আধা সরকারি এমনকি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের বা ব্যক্তিমালিকানাধীন পুকুর ভরাট না করার বিধান রয়েছে।’
যেহেতু নাটোরে বিভিন্ন স্থানে সরকারি জলাশয় ভরাট চলছে এ ব্যাপারে সরকারিভাবে কি উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ‘সংশ্লিষ্ট দপ্তর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এবং সেই দপ্তরকে প্রশাসন সার্বিকভাবে সহযোগিতা করবে।
ধারা ৬ ঙ এর বিধান লংঘনের প্রথম অপরাধের ক্ষেত্রে অনধিক ২ বৎসর কারাদণ্ড বা অনধিক ২ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড; পরবর্তী প্রতিটি অপরাধের ক্ষেত্রে অন্যূন ২ বৎসর, অনধিক ১০ বৎসর কারাদণ্ড বা অন্যূন ২ (দুই) লক্ষ টাকা, অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।’
সরকারি জলাশয় ভরাটকারি ডাঃ এ বি এম হাসান উজ্জামান হেলাল জানান, ‘জলাশয় ভরাটের জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগে, বাড়ি তৈরি করার সময় আবেদন করেছিলাম।’ তবে সেই আবেদনের কোন কপি তিনি দেখাতে পারেননি।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম জানান, ‘জলাশয় ভরাটের কাউকে কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। যারা এধরনের সরকারি ঝিল, জলাশয় ভরাট করছে তাদেরকে নোটিশ করে অবহিত করা হয়েছে।’
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জানান, ‘যেহেতু জায়গাগুলো সড়ক ও জনপথ বিভাগের তাই আমি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সঙ্গে কথা বলে সরকারি জলাশয় ভরাট বন্ধের উদ্যোগ গ্রহণ করবো।প্রয়োজনে সড়ক ও জনপথ বিভাগকে সার্বিক সহযোগিতার জন্য ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হবে।’