নাটোর নিউজ: নাটোরের দুটি পৌরসভা নাটোর ও বাগাতিপাড়া পৌরসভা নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুক্রবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। আগামীকাল রোববার পৌরসভা দুটিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে বলে জানিয়েছেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আছলাম। আজ ১৫ জানুয়ারি দুপুরে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের মাঝে সরঞ্জামাদি বিতরণ করা হবে। দুই পৌরসভায় ৭২ হাজার ৭১ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নাটোর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে ৬ জন, কাউন্সিল পদে ৬৫ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ৩০টি ভোটকেন্দ্রে রোববার ৩০ হাজার ৬৮১ জন পুরুষ ও ৩২ হাজার ৮০৫ জন নারী ভোট দেবেন। অপর দিকে বাগাতিপাড়া পৌরসভায় মেয়র পদে ৪ জন, কাউন্সিলর পদে ৩৭ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ৯টি ভোটকেন্দ্রে মোট ৮ হাজার ৫৮৫ জন ভোটার তাঁদের ভোট দেবেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নির্বাচনী প্রচারের শেষ দিনে নানা কৌশলে প্রার্থীরা ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা করেছেন। সব প্রার্থী এবং তাঁর সমর্থকেরা এলাকার একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্তের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের কাছে প্রতীক দেখিয়ে ভোট চেয়েছেন। কেউবা শেষবারের মতো মাথায় হাত রেখে দোয়া নিয়েছেন। সবার অংশগ্রহণে ভোটকে কেন্দ্র করে পৌরসভাজুড়ে এক উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।
নির্বাচনী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বাগাতিপাড়া পৌরসভায় সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণের জন্য ইতিমধ্যে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এবং পোলিং কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারের শেষ দিনে নির্বাচন কমিশন থেকে নমুনা ভোটের ব্যবস্থা করা হয়।
নওসারা গ্রামের আফসার আলী (৫০) বলেন, ইভিএম সম্পর্কে আগে ভয় থাকলেও সকালে কেন্দ্রে গিয়ে নমুনা ভোট দেওয়ার পরে সেই শঙ্কা তাঁর কেটে যায়। তাঁর কাছে এ পদ্ধতি খুব সহজ মনে হয়েছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বলেন, নৌকার প্রার্থী ও সমর্থকেরা শেষ দিনেও ভোটারদের নানা ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। তাঁরা ভোটের দিন সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।
অপর দিকে নৌকার প্রার্থী বলছেন, তাঁরা তাঁর নামে মিথ্যা প্রচার করছেন। তাঁদের কোনো বাধা বা ভয়ভীতি দেখানো হয়নি। তাঁরা নির্বিঘ্নে তাঁদের প্রচার চালিয়ে গেছেন। নিশ্চিত পরাজয় জেনে তাঁরা এসব অভিযোগ তুলছেন।
পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, ভোটের দিন দুই পৌরসভায় চার স্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল মজিদ বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত পরিবেশ ভালো রয়েছে। নির্বাচনের দিন ৯টি কেন্দ্রের সব কটিতেই সার্বক্ষণিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্বে থাকবেন। এ ছাড়া পুলিশ, ডিবি পুলিশ, বিজিবি, আনসার ও ভিডিপি এবং ব্যাটালিয়ন আনসার থাকবে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আছলাম বলেন, ভোট সুষ্ঠু করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইভিএমে ভোট দিতে যেন কোনো অসুবিধা না হয়, সে জন্য নমুনা ভোটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।