নাটোর নিউজ: নাটোর পৌরসভা নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী শেখ এমদাদুল হক আল মামুনের বিরুদ্ধে বসতবাড়ি দখলের অভিযোগ করেছেন শেখ নুর মোহাম্মদ আলু মিয়া নামের ১১৮ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ ও তার পরিবারের সদস্যরা। ৩২ বছর আগে ওই বৃদ্ধের থেকে বসতবাড়ির একটি অংশ পাঁচ বছরের জন্য ভাড়া নিয়ে মেয়াদ শেষে হস্তান্তর না করে জালিয়াতির মাধ্যমে দখল করেছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারটির। জমি ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন শতবর্ষী আলু মিয়া।
শুক্রবার(১৪ জানুয়ারি) দুপুরে শহরের এক রেস্তোরায় সংবাদ সম্মেলন করে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
শেখ নূর মোহাম্মদ আলু মিয়ার উপস্থিতিতে তার পুত্র ইলিয়াস লাল মিয়া লিখিত বক্তব্যে বলেন, ১৯৬৭ সালের ১৮ই জুন তারিখে হাউজ বিল্ডিং থেকে ঋণ নিয়ে নিজের বসতবাড়ি নির্মাণ করেন আলু মিয়া। সেখানেই তিনি স্থায়ীভাবে বসবাস করা শুরু করেন। ১৯৮৯ সালের পহেলা এপ্রিল প্রতিবেশি নাটোর পৌরসভার সাবেক মেয়র শেখ এমদাদুল হক আল মামুন বসতবাড়ির অর্ধাংশ আমার বাবার নিকট থেকে ভাড়া হিসেবে গ্রহণ করেন। সেসময় তিনি এককালীন ১৩ হাজার টাকা ও মাসিক ভাড়া বাবদ ৫০০ টাকা করে প্রদানের জন্য ১৯৯৩ সালের পহেলা এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন।
চুক্তির মেয়াদ শেষে বাসাবাড়িটি হস্তান্তর করারও অঙ্গীকার করেন এমদাদ। বসতবাড়ির অর্ধাংশ শেখ এমদাদুল হক আল মামুন ভাড়া নিয়ে সেখানে ‘নীলা ভিডিও’ নামের একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন। কিন্ত এক পর্যায়ে চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে তিনি বসতবাড়ির জায়গা তৃতীয় পক্ষের নিকট ভাড় দেন এবং নিয়মিত ভাড়া আদায় শুরু করেন। তখন থেকে তিনি আমাদের বাড়ির জায়গা নিজ দখলে রেখেছেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে শেখ এমদাদুল হক আল মামুনকে আমাদের জায়গার দখল ছাড়তে বললে তিনি তা দেবার নামে বিভিন্ন তালবাহানা ও বিলম্ব করেন। এই সুযোগে তিনি জালিয়াতি করে জমির কাগজপত্র রেজিস্ট্রি অফিসের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে নিজের নামে জাল করেন। ২০১১ সালে নাটোর পৌরসভা নির্বাচনের পর শেখ এমদাদুল হক আল মামুন মেয়র নির্বাচিত হলে তিনি আরও পাকাপোক্তভাবে জমি দখল করেন। তখন থেকে চেষ্টা করেও আর নিজের জমি উদ্ধার করতে পারিনি আমরা। সম্প্রতি নাটোর পৌরসভা নির্বাচন শুরু হওয়ার পর জানতে পারি জমির দখলদার শেখ এমদাদুল হক আল মামুন নাটোরে ফিরে আসেন। তিনি ফিরে আসায় আমরা আবারও তার সাথে যোগাযোগ করি। তিনি আবারও জায়গা নিজের দাবী করে সাফ জানিয়ে দেন যে তিনি আমাকে কোন জায়গা বুঝিয়ে দেবেন না। তিনি আমাদেরকে যা পারি করে নেয়ার হুমকি দেন।
লাল মিয়া আরও বলেন, এমদাদুল হক আল মামুন এবার মেয়র নির্বাচিত হলে আমাদের ভিটেছাড়া করার হুমকি দিয়েছেন। তাই এখন আমাদের সামনে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ছাড়া আর কোন রাস্তা নেই। তিনি মেয়র নির্বাচিত হলে আমাদের উপর যে অবর্ণনীয় অত্যাচার শুরু হবে তা নিয়ে শঙ্কিত আমরা।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে অভিযুক্ত মেয়র প্রার্থী শেখ এমদাদুল হক আল মামুনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিকেলে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি তার বক্তব্য জানাবেন।