নাটোর নিউজ সিংড়া: এখন সরিষা ফুলের ভরা মৌসুম। নাটোরের সিংড়ার চলনবিল অঞ্চলের মাঠ জুড়ে যতদুর চোখ যায় শুধু হলুদ আর হলুদ। মনে হবে এ যেন হলুদের রাজ্য। সরিষা ক্ষেতের এই হলুদ রাজ্যেই লুকিয়ে আছে কৃষকের স্বপ্ন। তবে এ বছর সরিষার ফলন ঘরে তোলার আগেই মধু উৎপাদনে বাড়তি আয়ের নতুন স্বপ্ন দেখা শুরু করেছেন কৃষক। সরিষা জমিতে মধু বাক্স বসিয়ে মধু উৎপাদনে আগ্রহী হচ্ছে এ অঞ্চলের কৃষকরা। মৌ চাষের প্রশিক্ষণ নিয়ে আধুনিক মৌ বাক্স স্থাপন করে মধু সংগ্রহে স্বাবলম্বীর মুখ দেখছেন অনেকেই। মধু চাষে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করছেন বলে জানিয়েছেন কৃষি বিভাগ। কৃষি বিভাগ বলছেন, সরিষা ক্ষেতে মধু উৎপাদন যত বেশি হবে মৌমাছির দ্বারা ফুলে ফুলে পরাগায়ন তত বেশি ঘটবে, ফলে সরিষার উৎপাদনও বাড়বে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিংড়া উপজেলার হাতিয়ান্দহ, লালোর, শেরকোল, চৌগ্রামসহ চলনবিলের মাঠ জুড়ে হলুদ সরিষার ক্ষেত। এসব হলুদ ক্ষেতের পাশে মৌ চাষের বাক্স বসিয়ে কৃষকরা মধু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
কৃষক আল মাসুম জানান, কৃষি অফিসের সহযোগিতায় মধু চাষে প্রশিক্ষণ নিয়ে এ বছরই প্রথম মধু উৎপাদন শুরু করেছি। সরিষার ফলন উঠার আগেই বাড়তি আয় করার সুযোগ পাচ্ছি।
কৃষক সাগর জানান, মাত্র দুটো বাক্স নিয়ে গত বছর প্রথম মধু চাষ শুরু করেছিলাম। খরচ বাদে গত বছর মধু বিক্রি করে আমার ৪০ হাজার টাকা আয় হয়েছিল। এ বছর আমার বাক্স আছে ১০টি। আশা করছি ২ লাখ টাকার মধু বিক্রি করতে পারবো।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ সেলিম রেজা বলেন, সিংড়া উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৩৮৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। সরিষা থেকে মধু উৎপাদন করে বাড়তি আয় হওয়ায় কৃষকদের মাঝে মধু চাষে আগ্রহ বাড়ছে। আমরা প্রথমবারের মত ১০জন কৃষককে মধু চাষের প্রশিক্ষণ দিয়ে ১০টি আধুনিক মৌ বাক্স দিয়েছি। তারা ইতোমধ্যে আশানুরুপ মধু উৎপাদনে সফলতা অর্জন করেছে। আমরা আশা করছি আগামীতে সরিষা চাষের পাশাপাশি মধু চাষীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে।