নাটোর নিউজ বাগাতিপাড়া: নাটোরের বাগাতিপাড়ায় নতুন সাজে বদলে যাওয়া পার্ক এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়।উপজেলার একমাত্র বিনোদনকেন্দ্র ইউএনও পার্ক সংস্কার ও আধুনিকায়ন করে এর চিত্র পাল্টে ফেলা হয়েছে। নতুন বছর পড়ার আগেই এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। যাতে করে থার্টিফার্স্ট ও নতুন বছরে বিনোদনের এক নতুন মাত্রা যোগ হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আগামী বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিনোদনকেন্দ্রের উদ্বোধন করা হবে। নাটোর সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে বাগাতিপাড়া উপজেলা সদরে বড়াল নদীর পাড় ঘেঁষে গড়ে উঠেছে এই পার্ক। নদীর ওপরে পাশাপাশি দুটি ব্রিজ। রেল ও সড়কের গার্ডার ব্রিজে সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে।
মনোরম পরিবেশে একটু সুস্থ বিনোদনের জন্য বয়োবৃদ্ধ, শিশু থেকে শুরু করে সবার আগমনে মুখরিত হয় এই পার্ক। একসময়ে যেখানে ছিল মাদকের আড্ডা, অসামাজিক কার্যকলাপসহ বিভিন্ন অপকর্মের নিরাপদ স্থান, সেখানেই গড়ে উঠেছে এই বিনোদনকেন্দ্র।
উপজেলা কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা,২০১৬ সালে সাধারণ মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে তৎকালীন ইউএনও খন্দকার ফরহাদ আহমদ এই পার্কটি গড়ে তোলেন। সে সময় বেশ কিছু স্থানে বিভিন্ন ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ধীরে ধীরে সৌন্দর্য হারায় পার্কটি।
বিষয়টিকে মাথায় রেখে বর্তমান ইউএনও প্রিয়াংকা দেবী পাল বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। তিনি উপজেলা প্রশাসনের পরিচালনায় ব্যক্তি অংশীদারিত্বকে যুক্ত করেন। হাবিবুর রহমান পলাশ নামের এক ব্যক্তি পার্কের সঙ্গে অংশীদারিত্ব নেন। এর পর থেকেই পাল্টে যেতে থাকে চিত্র।
রোববার দুপুরে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সম্প্রতি গার্ডার ব্রিজঘেঁষে নির্মাণ করা হয়েছে মূল ফটক। ওপরে ড্রাগন ও ডাইনোসরের ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে। পরেই সীমানাপ্রাচীরের ভেতরের প্রবেশের আরেকটি পথ। সেখানে আনারসের প্রতিকৃতি। বিনোদনপ্রেমীদের আকৃষ্ট করতে ভেতরে স্থাপন করা হয়েছে বেশ কিছু স্ট্যাচু। সিংহ, মাছ মুখে ঈগল, ব্যাঙ, দোয়েল, হরিণ, বক, ময়ূর, কুমির, শাপলা ফুলের ভাস্কর্যসহ নানান বৈচিত্র্য আনা হয়েছে। রাখা হয়েছে পানির ফোয়ারা, এর নিচে রঙিন মাছ। অপর পাশে রয়েছে বিশাল ডাইনোসর। তার পাশেই নাগর দোলা এবং শিশুদের জন্য দোলনা। সীমানাপ্রাচীরের পুরোটা জুড়ে বিভিন্ন প্রাণীর আঁকানো ছবি শিশুদের বিনোদনের খোরাক জোগাবে। মাঝে মাঝে খেজুরগাছের গোড়ায় ও অন্যান্য স্থানে বসার ব্যবস্থা। তা ছাড়া বিভিন্ন ফুল এবং সৌন্দর্যবর্ধক গাছ লাগানো হয়েছে। আর নদীতে রাখা হয়েছে প্যাডেল বোট। যেন গ্রামের মধ্যে এ এক কল্পনাপুরী।
ইউএনও প্রিয়াংকা দেবী পাল জানান, একসময়ের মাদকের আড্ডা, অসামাজিক কার্যকলাপসহ নানা অপকর্মের নিরাপদ স্থান চিড় এটি। এখানেই গড়ে তোলা হয়েছে এই পার্ক। উপজেলার একমাত্র পার্কটি রক্ষণাবেক্ষণ এবং সুস্থ বিনোদনের কেন্দ্র গড়ে তুলতে পলাশ নামের ব্যক্তির সঙ্গে উপজেলা প্রশাসন অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে চুক্তি স্থাপন করা হয়েছে।
এতে পুরো আয়ের ৭০ ভাগ পলাশ এবং ৩০ ভাগ আয় উপজেলা পরিষদের খাতে জমা হবে। আর সবকিছু রক্ষণাবেক্ষণ করবে পলাশ। ফলে ইউএনও পার্কের সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণ হবে। একই সঙ্গে গ্রামের মানুষ পাবে সুস্থ বিনোদনের একটি পরিবেশ।