নাটোর নিউজ: নাটোরের লালপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে ঘুরে দেখা গেছে শীত মৌসুমের উপাদেয় খাবার কুমড়ো বড়ি তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নারীরা। মাছ ঝোলে বা সবজির সঙ্গে কুমড়ো বড়ি বাঙালির ঐতিহ্যবাহী খাবার। শীতের আমেজে লালপুর উপজেলার ঘরে ঘরে কুমড়ো বড়ি ’ তৈরির হিড়িক পড়ে গেছে।মাসকলাই ও চালকুমড়ো দিয়ে কুমড়োর বড়ি তৈরিতে প্রতি বছরের এ বছরেও গ্রামঞ্চলের নারীদের ব্যস্ততা দেখা মিলছে শীতের সকালে। শীতের হিম শিতল বাতাসে ও প্রচন্ড শীত উপেক্ষা করে সুস্বাদু কুমড়োর বড়ি তৈরীতে ব্যস্ত গ্রামের নারীরা।
মাসকলাই ভিজিয়ে রাখার পর সেটি দিয়ে ডালের আটা ও পাকা চাল কুমড়ো মিশিয়ে এ সুস্বাদু বড়ি তৈরি করা হয়।
গ্রামীণ এলাকার ৯০ ভাগ মহিলা পালাক্রমে একে অপরকে সহযোগিতা করে কুমড়ো বড়ি তৈরির কাজটি করে থাকেন। অত্র এলাকার নারীরা এই বড়ি তৈরি করতে কয়েক মাস পূর্ব থেকেই চাহিদা মতো চাল কুমড়ো পাকানোর ব্যবস্থা করে থাকেন। এরপর মাসকলাই দিয়ে তৈরি করা হয় এই সুস্বাদু খাবারের অংশবিশেষ কুমড়ো বড়ি।
গৃহবধু রোজিনা বেগম বলেন, বড়ি দেওয়ার আগের দিন মাষকলাই ডাল (স্থানীয়দের ভাষায় বলে ঠিকরি কলাই) খোসা ছাড়িয়ে পরিষ্কার করে পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হয়। সন্ধ্যায় চালকুমড়ার খোসা ছাড়িয়ে ভেতরের নরম অংশ ফেলে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর কুমড়ার পানি ঝরিয়ে নিতে কুমড়া মিহি করে কুরিয়ে পরিষ্কার কাপড়ে বেঁধে সারারাত ঝুলিয়ে রাখতে হবে।
পরদিন ভোরে ডালের পানি ছেঁকে মিহি করে বেটে পেস্ট তৈরি করতে হবে। পানি ঝরানো কুমড়ার সঙ্গে প্রায় সমপরিমাণ ডাল ও পরিমাণ মতো লবণ মেশাতে হয়। পরে কড়া রোদে পরিষ্কার কাপড়, চাটাই বা নেটের ওপর ছোট ছোট করে বড়ি দিতে হবে। এই বড়ি ভালো করে রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করলে অনেকদিন পর্যন্ত খাওয়া যায় বলে জানান শামীমা।
তিনি আরও জানান, শীত না পড়লে বড়ি ভালো হয় না। যত বেশি শীত পড়বে তত বড়ির স্বাদ হবে। খেতে ভালো লাগবে।
স্কুল শিক্ষিকা আকলিমা বেগম জানান,, বড়ি রোদে শুকিয়ে কৌটায় ভরে অনেক দিন রাখা যায়। তরকারিতে এ বড়ি দিলে খুব সুস্বাদু হয়। নতুন প্রজন্মের মেয়েরা এসব শিখতে কিম্বা বড়ি তৈরি করতে আগ্রহী না। তারা এ রেওয়াজ থেকে যেভাবে পিছিয়ে পড়ছে, তাতে আগামীতে এটা হারিয়ে যাবে।
কুমড়ো ব্যবসায়ী আতিকুর রহমান জানান, নাটোরের লালপুরের কুমড়ো বড়ি ঢাকা,চট্রগ্রাম ,খুলনা ও সিলেটে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে । দুই বছর ধরে ভারতেই রপ্তানী হচ্ছে ।