Homeসাহিত্যপিঁপড়েকলোনীর পাঠাগার - রহমান হেনরী

পিঁপড়েকলোনীর পাঠাগার – রহমান হেনরী

পিঁপড়েকলোনীর পাঠাগার
রহমান হেনরী

সমাজকে বুঝতে, ছয় পা আর একজোড়া শুঁড়ের সেই প্রাণিদের সাথে শিশুবেলা থেকেই সখ্য আমার—

ওদের কোনও নগর বা গ্রামাঞ্চল নেই। বর্ষপঞ্জি মুদ্রিত আছে প্রত্যেকের দেহে। ফুসফুস নেই— বিকর্ণ; কিন্তু শ্রবণশক্তি আছে এবং আমি তো ওদের ঘ্রাণশক্তিকে বরাবরই সমীহ করি!

কোনও কোনও ছুটির দিন, দুপুরবেলায়, ব্যক্তিগত কক্ষের দুয়ার বন্ধ করে, যখন সটান শুয়ে পড়ি— ওদের দু’জন চলে আসে; একজনের সাথে দেহবদল করে তাকেই নিজের ড্যামি হিসেবে শুইয়ে রাখি নিজের বিছানায়। আরেকজনের সাথে জানালার ছিদ্রপথে বেরিয়ে পড়ি। সে আমাকে নিয়ে যায় কলোনী ঘুরিয়ে, গোপন পাঠাগারে— সন্ধ্যায়, কক্ষে ফিরে, দেহ বদলানোর আগেই জেনে ফেলি অনেক অনেক কৃৎকৌশল।

তাদের রানি, নারীকর্মি এবং পুরুষ যোদ্ধাদের আন্তরিক আচরণ কয়েক ঘন্টার জন্য ভুলিয়ে রাখে আমার প্রাণিপরিচয়; উদাহরণস্বরূপ, এক নারীকর্মির কথা বলি— নিজ ওজনের তিনগুণ ভার পিঠে নিয়ে গটগট ছুটতে ছুটতে, আমাকে দেখেই হেসে ফেললো: ‘পুষ্পখণ্ডে যাও, আসছি এখুনি’!

ওরাই তো আমাকে শেখালো: বর্ণহীন ফুলগুলোকে কী কারণে বিচিত্র রঙে দেখতে পায় মানুষ; এবং ওদেরই ঘ্রাণবিদ্যার রণকৌশল কাজে লাগিয়ে, আমি এখন নিশ্চিত করে বলতে পারি: চুরি ও পাচারের অর্থসম্পদ কে কোথায় গোপন করছে।

পঁয়তাল্লিশ বছর কম সময় নয়— নিয়মিতই যাতায়াত করছি পিঁপড়েকলোনীতে!

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments