Homeগুরুত্বপূর্ণবকেয়া না দেওয়ায় প্রবেশপত্র দেয়নি কলেজ কর্তৃপক্ষ, এইচএসসি পরীক্ষার্থীর পাশে ডিসি

বকেয়া না দেওয়ায় প্রবেশপত্র দেয়নি কলেজ কর্তৃপক্ষ, এইচএসসি পরীক্ষার্থীর পাশে ডিসি

বকেয়া টাকা না দিতে পারায় এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে প্রবেশপত্র দেয়া হয়নি

নাটোর নিউজ: কলেজের পাওনা টাকা এবং ফরম পূরণের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় নাটোরের উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষার্থী জরিপ আলীকে প্রবেশপত্র দেয়নি কলেজ কতৃপক্ষ।

সেকারণে জরিপ আলী পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারেনি। তবে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদের চেষ্টায় অলশ পরীক্ষা দিলো জরিপ আলী।

পরীক্ষার্থী জরিপ আলীর মা শরিফ বেওয়া বলেন, “২০১৮ সালে তাঁর স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে নাবালক শিশু জরুপের উপার্জনেই সংসার চালাতে হয় তাদের। দারিদ্রতার কারণে জরিফ কখনও দিনমজুর আবার কখনও রাজমিস্ত্রীর হেলপার হিসাবে কাজ করে কোন রকমে সংসার চালায়। অভাবের কারণে কলেজের টাকা দিতে পারেনি জন্য কলেজ থেকে প্রবেশপথ দেয়নি। তাই আমার ছেলের জীবনটা ধ্বংস হয়ে গেলো! শিক্ষকরা এতটা পাষাণ হয় আমার জানা ছিলো না!”

পরীক্ষার্থী জরিপ আলী বলেন, “সংসার চালাতে গিয়ে তিনি কলেজের সেসন ফিসহ পরীক্ষার ফি’য়ের পুরো টাকা দিতে পারেননি। গত শনিবার তিনি কলেজে গিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রবেশপত্র চায় কিন্তু কলেজের করণিক সামুদ আর শিশির টাকা বকেয়া থাকায় প্রবেশপত্র দিতে অপারগতা জানান। নিরুপায় হয়ে আমি ফিরে আসেন। আজ দুপুর ২টায় নাটোর মহিলা কলেজ কেন্দ্রে প্রথম পরীক্ষা (হিসাব বিজ্ঞান) শুরু হয়। আমি কেন্দ্রেও আসেন। কিন্তু প্রবেশপত্র না থাকায় পরীক্ষা কক্ষে ঢুকতে পারেননি। পরে মহিলা কলেজের একজন স্টাফ আমাকে জিজ্ঞেস করে কেন ঘোরাফেরা করছি। আমি যখন আমার সমস্যার কথা খুলে বলি তারপর সাংবাদিকদের জানান ওই স্টাফ। সাংবাদিকদের কাছে শুনে জেলা প্রশাসক স্যার এসে কলেজ কতৃপক্ষকে ডেকে বকেয়া টাকা পরিশোধ করে পরীক্ষায় দেয়ার ব্যবস্থা করে দেন।

জরিপ আলী নাটোর সদর উপজেলার তেবাড়িয়া ইউনিয়নের বাঙ্গাবাড়ি গ্রামের মৃত সামসুদ্দিন মন্ডলের ছেলে। তিনি চন্দ্রকলার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। নাটোর মহিলা কলেজ কেন্দ্রে তাঁর হিসাব বিজ্ঞান পরীক্ষা ছিল।

কেন্দ্রসচিব রেজাউল করিম জানান, চন্দ্রকলা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কলেজের শিক্ষার্থী জরিপ আলীর পরীক্ষা দিতে না পারার বিষয়টি জানতে পেরে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ তাৎক্ষণিক ওই কেন্দ্রে চলে আসেন। জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় জরিপ আলীর পরীক্ষা নেয়া হয়।

জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, তিনি জরিপ আলীর সময়মত পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারার খবর শুনে তাৎক্ষণিক পরীক্ষা কেন্দ্রে ছুটে যান। তিনি ব্যাক্তিগতভাবে জরিপ আলীর কলেজের পাওনাদি পরিশোধ করে তার পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। টাকার জন্য প্রবেশপথ না দিয়ে পরীক্ষা দিতে না দেওয়া একজন শিক্ষার্থীর জীবন নষ্ট করার সামিল। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে জেলা প্রশাসক ছুটে আসলেও আসেননি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কলেজের অধ্যক্ষ মৌসুমি পারভীন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক গোবিন্দ কুমার দত্ত জানান, জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ স্যার জরিপ আলীর বকেয়া টাকা পরিশোধ করে দিয়েছেন।
প্রবেশপত্র না পাওয়ার বিষয়টি তিনি অনেক পরে জানতে পেরেছেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কলেজের অধ্যক্ষ মৌসুমি পারভিন জানান,জরিপ আলী প্রবেশপত্র না পাওয়ার বিষয়টি ওই শিক্ষার্থী আমাকে কিছুই জানায়নি। জরিপ আলী বা তার পরিবারের কেউ আমাদের কিছু জানায়। জেলা প্রশাসক কেন্দ্রে গেলেও তিনি কেন গেলেন না এমন প্রশ্নের জবাবে মোসুমী পারভীন বলেন পারিবারকি ব্যস্ততায় তিনি যেতে পারেননি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments