সিংড়ায় মোড়ে মোড়ে শীতের পিঠার ঘ্রাণ
আবু জাফর সিদ্দিকী, সিংড়া
দেশের উত্তরের জেলা নাটোর। এ জেলায় শীতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে চলছে শীতের পিঠা বিক্রির ধুম। শীতকে উপেক্ষা করে শহর-গ্রামের মানুষেরা পিঠা খেতে ছুটছে পিঠার দোকানে। শীতের এই পিঠাকে ঘিরে এক উৎসবে পরিণত হয়েছে ।
সময়ের বিবর্তনে ধীরে ধীরে বাড়িতে এসব আয়োজন করা নানা রকম বাহারি পিঠা তৈরি থেকে দিন দিন মানুষ বিরত হচ্ছে। ইচ্ছে থাকলেও এখন আর ঘরে বানানো পিঠা খেতে পারছে না অনেকেই। বেশির ভাগ মানুষ ছুটছে পিঠার দোকানে। তাই শহর ও গ্রামগঞ্জের মানুষের রসনা বিলাসে রাস্তার মোড়ে-মোড়ে জমে উঠেছে বাহারি পিঠার পসরা।
নাটোরের সিংড়া উপজেলা জুড়ে ফুটপাতের দোকান, রাস্তার পাশে, অলিতে-গলিতে এবং মোড়ে-মোড়ে জমে উঠেছে এসব শীতের পিঠার দোকান। সারাবছর কম বেশি পিঠা চললেও শীত এলেই বেড়ে যায় ক্রেতাদের আনাগোনা। পিঠা প্রেমিদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে এসব দোকান। শীতের এই মৌসুমে মুখে জল ভরা স্বাদ নিয়ে পিঠা-পুলির দোকানে ভিড় করছে শিশু- কিশোর, বৃদ্ধসহ সব বয়সী মানুষ। তারা পিঠা খেতে খেতে মজার মজার গল্পে মেতে ওঠেন। সিংড়া পৌরসভার বাসষ্ট্যান্ড, চকসিংড়া, সোহাগবাড়ি, কতুয়াবাড়ি, মহেশচন্দ্রপুর, বালুয়া-বাসুয়া, দমদমা, মাদ্রাসা মোড়, বুড়াপীরতলা মোড়ে অন্তত ৫০ টি পিঠার দোকান রয়েছে।
নারিকেল ও খেঁজুর গুড়ের তৈরি ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, ঝাল-মসলা পিঠা, সাদা পিঠা, তেলের পিঠা, দুধ পিঠা, মাশকালাইয়ের রুটি, ডিম রুটি, নানা রকম মসলার তৈরি ধনিয়া পাতার চাটনিসহ বাহারি সব পিঠা। শীতের সকাল আর সঁন্ধ্যার হাওয়ায় ভাসছে এসব পিঠার ঘ্রাণ।
শহরের চকসিংড়া মহল্লার পলাশ বলেন, ১০ টাকায় নারকেল-গুড় দিয়ে সুস্বাদু ভাপা পিঠা পাওয়া যায়। খেতে অনেক ভাল লাগায় আমি নিয়মিত খাই।
পাশ্ববর্তী নলডাঙ্গা উপজেলার তুহিন ইসলাম বলেন, এই পথে যাওয়ার সময় ভাপা ও চিতাই পিঠার পসরা সাজানো দেখে খুবই ভাল লেগেছে। এসব পিঠা খেয়ে অনেক মজা পেয়েছি।
মুর্শিদা বেগম ও শারমিন জাহান নামের দুজন ক্রেতা বলেন, আমরা প্রায়ই এখানে পিঠা খাই। চাল ভেঙে আটা করে পিঠা বানানোর সময় সুযোগ আর হয় না। ঝামেলা ছাড়াই স্বল্প দামে হাতের নাগালেই এখন পিঠা পাই। তাই এসব পিঠাই আমাদের ভরসা।
সিংড়া বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় পিঠা বিক্রি করেন মুক্তার হোসেন, নইমুর ইসলাম ও মাসুম। কথা হয় নইমুর ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, শীতের সময় শীতকালীন পিঠা বিক্রি করে থাকি। পিঠা বিক্রির আয়েই সংসার চলে। শীত বাড়লে পিঠা বিক্রিও বেড়ে যায়।