Homeসাহিত্যফেসবুকে আলাপন - সুজিত ঘোষ এর অণুগল্প

ফেসবুকে আলাপন – সুজিত ঘোষ এর অণুগল্প

বিষয়: অণু গল্প
শিরোনাম: ফেসবুকে আলাপন

কলমে: সুজিত ঘোষ
তারিখ:২৫-১১-২১

আজ খুব বিচলিত অমিত অনেক বড় ঝড় বয়ে গেলো তার উপর দিয়ে। ছোট বেলার খেলার সাথী রত্নার বিয়ে হলো আজ। রাত শেষের পথে তবুও ঘুম নেই অমিতের চোখে। দুচোখ দিয়ে জলের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। এভাবে কখন রাত শেষ হয় তার হুস নেই। অমিতের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে বেশ কয়েক দিন সময় লেগে যায়। দিন পনেরো পড়ে সে তার মোবাইল ফোন নিয়ে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলো দেখছে এবং স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু পারছে না এমন অবস্থায় ফেসবুকে প্রবেশ করে।

ফেসবুকে যাবে না বলে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে, কারণ ফেসবুকে প্রবেশ করলে যে তার চোখে পরবে রত্নার বিয়ের দৃশ্য বিভিন ধরনের ছবি। তাতে তার কষ্ট আরো বাড়বে এই ভয়ে। হঠাৎ অমিতের মনে হলো রত্নার আইডি ব্লকলিষ্ট করব। ফেসবুকে গিয়ে ব্লকলিষ্ট করে রত্নার আইডি। এমন সময় তার চোখে পড়ে তার কছে ফেন্ড রিকোয়েস্ট এসেছে অনেক গুলো। এর মধো শুধু চোখ দিয়ে একটা আইডি দেওয়া আছে দেখে সেই আইডি একসেপ্ট করেন। কারণ চোখ গুলো দেখে মনে হয়েছে অনেক পরিচিত চোখ তাই। একসেপ্ট হওয়ার সাথে সাথে ওপর প্রান্ত হতে ম্যসেস আসে ।ধন্যবাদ কেমন আছেন। এভাবে ম্যসেস আদান প্রদান এর মধ্যে দিয়ে সেই রাত কেটে যায়। এভাবে অনেক দিন কেটে যায়। এখন অমিত রত্নাকে দিনে দিনে ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করছে।

অমিত তার ফ্রেসবুকের সেই বন্ধুত্ব সাথে আলাপচারিতায় ঘনিষ্ঠ হয়ে যায় এবং একে অপরকে দেখবে তাই দেখা করার দিন ঠিক করে। এক মাস পড়ে কারণ অমিতের বাড়ি বাংলাদেশ আর ফেসবুকের সেই বন্ধু মানে মেয়ে বন্ধুর বাড়ি যে ভারতের কলকাতার বউবাজারে। একমাস পড়ে অমিত কলকাতার উদ্দেশে রওনা হয়। এবং কলকাতা পৌঁছে যায়। অমিতের জীবনে প্রথম কলকাতা যাওয়া তাই আবেগ অনুভূতি টা অনেক বেশি। আর বেশি হওয়ায় অন্যতম কারণ হচ্ছে ফেসবুকে প্রেমে পড়া সেই বন্ধু তন্দ্রার জন্য। জীবনে রত্না কে ভালবেসে অন্য কোন মেয়েকে প্রেমের দৃষ্টি দিয়ে দেখেনি। এখন আর অমিতের জীবনে কোন বাধা পিছুটান নেই।

অমিত কলকাতার একটি আবাসিক হোটেল উঠে। এবং পরের দিন তন্দ্রার সাথে দেখা করে।সারাদিন কলকাতা শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ায়। এবং তন্দ্রা অমিত কে নিয়ে তার বাড়িতে যায়। কারণ তন্দ্রা ও অমিতের বাড়ির সবাই জানতো তাদের সম্পর্কের কথা। তন্দ্রার বাড়ির সবাই অমিতকে পছন্দ করে। অমিতের বাড়িতে শুধু অমিতের বাবা আর মা ছাড়া কেউ নেই। ছেলের সুখেই বাবা মার সুখ।অমিত ও তন্দ্রার পরিবারের সবাই মিলে তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করে। তন্দ্রার বাবা মা সহ পরিবারের বেশ কিছু লোকজন অমিতের সঙ্গে তার বাড়ি বাংলাদেশ আসে।এসে বিয়ে দেয়। এদিকে অমিত আর তন্দ্রা মিলে ঠিক করে যে তাদের পরিচয়, প্রেম ও বিয়ে যেহেতু ফেসবুকের মাধ্যমে তাই তাদের বিয়ের পাটিতে বিভিন্ন জায়গায় লিপিবদ্ধ হবে “ফেসবুকে আলাপন”।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments