Homeবিনোদনআজ ভূত চতুর্দশী, কৃষিজীবী বাঙ্গালীর উৎসব

আজ ভূত চতুর্দশী, কৃষিজীবী বাঙ্গালীর উৎসব

আজ ভূত চতুর্দশী, কৃষিজীবী বাঙ্গালীর উৎসব
দেওয়ালি, দীপাবলি যে নামেই ডাকা হোক, আজ আসলে ভূত চতুর্দশী। এই দিন দুপুরে খেতে হয় চৌদ্দ শাকের ব্যঞ্জন আর সন্ধ্যায় প্রতি বাড়িতে জ্বালাতে হয় চৌদ্দ প্রদীপ।
চৌদ্দ শাক* খেতে হয় কারন এটাই ছিলো এককালের কৃষিজীবী বঙ্গবাসীর নিয়ম। কারোর জন্যে ধর্মীয় আচার। আর চৌদ্দ প্রদীপ জ্বালিয়ে চৌদ্দ পুরুষের** আত্মাকে তুষ্ট করে অশুভ শক্তিকে দূর করতে হয় এই রাতে। পুরাণ মতে মৃত্যুর পর মানবশরীর পঞ্চভূতে (আকাশ, মাটি, জল, হাওয়া, অগ্নি) বিলীন হয়। তাই মাটি থেকে তুলে আনা শাক খেলে অতৃপ্ত আত্মার রোষানল থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আচারের বিচার ভুলে যেয়েও আমরা কেবল এই তিনটি কথা আজ মনে রাখতে পারি।
১। চৌদ্দ শাক খেতে হলে চৌদ্দ শাক বাড়ির ক্ষেতের আনাচের কানাচে থাকা দরকার। এগুলোর বেশিরভাগই অচাষকৃত বনজ উদ্ভিদ। এগুলো থাকলে জীববৈচিত্র রক্ষা পায়।
২। এক সঙ্গে অনেকগুলি প্রদীপ জ্বালিয়ে ক্ষতিকারক কীটের হাত থেকে হৈমন্তিক ফসল রক্ষা করার এটা একটা প্রাকৃতিক উপায়। এই অমাবস্যার আঁধার রাতে উন্মুক্ত জ্বলন্ত প্রদীপে আত্মাহুতি দিয়ে পোকামাকড় মরে যায়। কীটনাশক ছাড়াই ফসল রক্ষা পায়।
৩। এই সময় আবহাওয়ার পরিবর্তন হয়। উত্তরের ঠাণ্ডা হাওয়া বইতে শুরু করে। ঋতু পরিবর্তনের সময় চৌদ্দ শাকের মিলিত পুষ্টি শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ায়।
অমাবস্যার আজকের রাত হলো চন্দ্রকলার প্রথম ধাপের রাত যখন চাঁদ থেকে আলোর প্রতিফলন আসে না। চাঁদের প্রভাবে যেমন পৃথিবীর জলের বুকে দোলা লাগে, তেমন মানবশরীরেও কিছু প্রতিক্রিয়া হয় (যেহেতু মানুষের শরীরের ৬০% জল)।
——————
* প্রধানত, ওল, বেতো, সরষে, পুঁই, শুশনি, নিম, মেথি, হিলঞ্চ, পলতা, শৌলফ, গুলঞ্চ, শুষণী, লাল , লাউ । স্থান ও প্রাপ্যতা ভেদে নতুবা অন্য কোন শাক।
** পিতা, পিতামহ, প্রপিতামহ, মাতা, পিতামহী, প্রপিতামহী, মাতামহ, প্রমাতামহ, বৃদ্ধপ্রমাতামহ, মাতামহী, প্রমাতামহী, বৃদ্ধপ্রমাতামহী, শ্বশুর, শাশুড়ি।
জাহিদ হাসানের ওয়াল থেকে
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments