Homeশিক্ষাপাঠাগার বিষয়ক অনুরোধে স্বকৃত নোমান

পাঠাগার বিষয়ক অনুরোধে স্বকৃত নোমান

পাঠাগার বিষয়ক অনুরোধে স্বকৃত নোমান

প্রিয় বন্ধু, একটু দাঁড়ান। একটি বিনীত অনুরোধ শুনে যান।

এই সমাজের পরিবর্তন দরকার। জনগণের মননের পরিবর্তন দরকার। কিন্তু কীভাবে হবে সেই পরিবর্তন? উপায় একটাই—জ্ঞানচর্চা। আর জ্ঞানচর্চার জন্য প্রয়োজন পাঠাগার। কোনো গ্রামে যদি একটি পাঠাগার থাকে, অন্তত একজন হলেও জ্ঞানব্রতী হবে। তিনি বাঁজাবেন জ্ঞানবাঁশি। সেই বাঁশির সুরে অন্যরা মুগ্ধ হবে, তার পাশে দাঁড়াবে। এভাবেই সর্বত্র ছড়িয়ে পড়বে জ্ঞানের আলো। জ্বলে উঠবে আরও অসংখ্য জ্ঞানপ্রদীপ।

আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থা যখন জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র পাঠাগার প্রতিষ্ঠায় উদাসীন, সারাদেশে সরকারি পাঠাগারগুলোর যখন বেহাল দশা, প্রজন্ম যখন ছুটছে বিসিএস গাইডের পেছনে, তখন দেশের নানা প্রান্তে জ্ঞানপ্রেমী প্রগতিশীল তরুণরা গড়ে তুলছে পাঠাগার। তেমনি একটি উদ্যোগ ত্রিশালের রাণীগঞ্জ পাঠাগার। ‘দ্যা স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন’র কিছু উদ্যমী তরুণ সেচ্ছাসেবী ত্রিশালের মঠবাড়ী ইউনিয়নের পোড়াবাড়ী বাজারে প্রতিষ্ঠা করেছে পাঠাগারটি। তাদের উদ্দেশ্য, রাণীগঞ্জের সর্বস্তরের মানুষের পাঠাভ্যাসের উন্নয়ন, নৈমিত্তিক জীবনের জন্য তথ্যের যোগানদান এবং মননশীলতা চর্চার সুযোগ সৃষ্টি।

মহৎপ্রাণ কিছু ব্যক্তির সহযোগিতায় পাঠাগার-ভবনের কাজ প্রায় শেষ। বুকশেলফও প্রস্তুত। বাকি শুধু চেয়ার-টেবিল। এগুলোর ব্যবস্থাও হয়ে যাবে নিশ্চয়ই। কোনো মহৎ মানুষ নিশ্চয়ই এগিয়ে আসবেন। ব্যবস্থা করে দেবেন চেয়ার-টেবিল। আমরা আশাবাদী। কিন্তু বইয়ের কী হবে? একটি পাঠাগারের জন্য যে পরিমাণ বইয়ের প্রয়োজন সেই বই পাঠাগারটিতে নেই। কেনার মতো পর্যাপ্ত অর্থও নেই।

তাই বলে কি বুকশেলফগুলো খালি পড়ে থাকবে? রাণীগঞ্জের তরুণদের উদ্যোগ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে? না, খালি পড়ে থাকতে আমরা দেব না, ব্যর্থ হতে আমরা দেব না। আমরা তো চাই এই জীর্ণ সমাজ বদলে যাক, মানুষের মনন বদলে যাক। কিন্তু সেই বদল তো এমনি এমনি হবে না। হবে আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়। আমরা কি পারি না প্রত্যেকে দু-একটি করে বই পাঠাগারটির ঠিকানায় পাঠাতে? অবশ্যই পারি। কেবল আমাদের পাঠানো বই দিয়েই পাঠাগারটিকে সমৃদ্ধ করা সম্ভব। আমরা পারবই। পারতে আমাদের হবেই। আমরা না জাগলে সকাল তো হবে না।

প্রিয় বন্ধু, বিনীত অনুরোধ করি, আপনার সামর্থ অনুযায়ী রাণীগঞ্জ পাঠাগারের ঠিকানায় বই পাঠান। আপনার পাঠানো বই পড়ে গড়ে উঠবে একটি প্রজন্ম। একদিন তারা আলো ছড়াবে রাণীগঞ্জে, ত্রিশালে, ময়মনসিংহে এমনকি গোটা বাংলাদেশে। এমনও হতে পারে, রাণীগঞ্জ থেকেই উঠে আসবে রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দ বা নজরুলের মতো বড় কবি, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ বা আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের মতো বড় কথাশিল্পী।

আশা করি আমরা নিরাশ হবো না।
আপনাদের জয় হোক।
.
বই পাঠানোর ঠিকানা :
রোবায়েত হুসাইন রুসাত
রাণীগঞ্জ পাঠাগার
পোড়াবাড়ি, ত্রিশাল, ময়মনসিংহ।
ফোন : ০১৯১৮১৮৯০৫০
.
[বই পাঠাবেন ডাকযোগে কিংবা সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসে। আর যাঁরা বই দেবেন তাঁদের নাম, বইয়ের সংখ্যা ও নাম উল্লেখ করে আমরা ফেসবুকে পোস্ট করে প্রচার করতে চাই। আপনি বলতে পারেন, আমি গোপনে বই পাঠাব, প্রচার কেন? আমরা আপনার সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত। তবে একটু কথা আছে। আপনি যে বই দিচ্ছেন, তা অন্যরা জানলে অনুপ্রাণিত হবে, বই দিতে উৎসাহী হবে। সেজন্যই প্রচার করা। তবু যদি আপনি প্রচার করতে অনিচ্ছুক হন, আপনার অনিচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধা। আমরা প্রচার থেকে অবশ্যই বিরত থাকব।]

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments