নাটোর নিউজ: সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে নষ্ট চাল জব্দ করার ঘটনায় নিয়মিত মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন নাটোর সদর আমলি আদালতের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এ এফ এম গোলজার রহমান। প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনকে মামলার এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার কথাও বলেছেন আদালত। সোমবার বিকেলে বিচারক গোলজার রহমান এই আদেশ দেন। তিনি ২৫ আগস্ট মামলার পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন।
নাটোর আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) সিরাজুল ইসলাম জানান, আদালত জনস্বার্থে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকার দুটি প্রতিবেদন মামলার এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। মাত্র দুই দিনের মধ্যেই মামলা রুজু করার বিষয়টি আদালতে অবহিত করার জন্য সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকেলে আদালতের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এ এফ এম গোলজার রহমান ১২ আগস্ট প্রথম আলো অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত ‘সরকারি খাদ্যগুদামে ট্রাকসহ ৫৯১ বস্তা নষ্ট চাল জব্দ’ ও ১৩ আগস্ট দ্য ডেইলি স্টার অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত ‘নাটোরে খাদ্যগুদাম থেকে নিম্নমানের চাল জব্দ, তদন্ত কমিটি’ শীর্ষক প্রতিবেদন দুটি এবং নাটোর সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল মতিনের গৃহীত জিডি পর্যালোচনা করেছেন। পর্যালোচনায় আমলযোগ্য অপরাধ সংঘটনের সুস্পষ্ট উপাদান বিদ্যমান রয়েছে বলে আদালতের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত সংবাদ দুটি এজাহার হিসেবে নিয়মিত মামলা রুজু করে ২৫ আগস্ট আদালত চলাকালে লিখিতভাবে অবহিত করার জন্য সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
এদিকে জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলা খাদ্যগুদামে ১২ আগস্ট নষ্ট চাল ঢোকানোর অভিযোগে চালসহ ট্রাক জব্দ করার ঘটনাটি খাদ্য বিভাগের তিন কর্মকর্তাকে দিয়ে তদন্ত করানো হয়েছে। এ ব্যাপারে দায়িত্বে অবহেলার জন্য খাদ্য উপপরিদর্শক তরিকুল ইসলাম, দারোয়ান আবদুল কুদ্দুস ও আবু তৈয়বকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। একই সঙ্গে গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ তাঁদের কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
নাটোর ইউনাইটেড প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, নাটোর সরকারী খাদ্য গোডাউনে পচা ও নিম্নমানের ৫৯১ বস্তা চাল ঢোকানোর অভিযোগে চালসহ ট্রাক জব্দ করার ঘটনাটি খাদ্য বিভাগের তিন কর্মকর্তাকে দিয়ে তদন্ত করানো হয়েছে। এ ব্যাপারে দায়িত্বে অবহেলার জন্য খাদ্য উপপরিদর্শক তরিকুল ইসলাম, দারোয়ান আবদুল কুদ্দুস ও আবু তৈয়বকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। একই সঙ্গে গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মফিজ উদ্দিন সহ তাঁদের কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
অথচ ঘটনার মুল নায়করা ধোরাছোঁয়ার বাহিরে। ওসি এলএসডি মফিজ উদ্দিন দাঁড়িয়ে থেকে গোডাউনে ১৭৪বস্তা চাল প্রবেশ করায়। পরবর্তীতে খাদ্য বিভাগের তদন্ত কমিটি ১৭৪ বস্তার মধ্যে ৪৯বস্তাই নস্ট ও পচা চাল পায়। এরআগেও ৪০টন নস্ট চাল গোডাউনে প্রবেশের চেস্টা করানো হয়। সেটার সাথেও সেই মফিজ জড়িত। অথচ মফিজ ধোরাছোয়ার বাহিরে। মফিজরা মফিজই থেকে যাবে, কিচ্ছু হবে না।
জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক রবীন্দ্র লাল চাকমা জানান, আদালতের আদেশ সম্পর্কে তিনি সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কিছুই জানতে পারেননি। এ রকম আদেশ হলে বিষয়টি খাদ্য বিভাগকে বিব্রত করবে বলে তিনি মনে করেন। তবে তিনিও চান, তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।