নাটোর নিউজ সিংড়া : দেশ বিরোধী শক্তি এখনো দেশে-বিদেশে বসে নিরবচ্ছিন্ন ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে উল্লেখ করে সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যের ডাক দিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। প্রতিমন্ত্রী পলক শনিবার সন্ধ্যায় গ্রেনেড হামলা দিবস উপলক্ষে নাটোরের সিংড়া উপজেলা ও পৌর যুবলীগ আয়োজিত ভার্চুয়াল দোয়া ও আলোচনা সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে একথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৭১ এর স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রাক্কালে ২৫ মার্চের কালো রাতের হত্যাযজ্ঞ, ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ড, ৭৫ এর ১৫ আগষ্ট স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা এবং ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু এ্যভিনিউতে সন্ত্রাস বিরোধী আওয়ামী লীগের সমাবেশে নারকীয় গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আইভী রহমানসহ ২৪জন নেতা-কর্মীর হত্যাকান্ড একই সূত্রে গাঁথা। নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ অভূতপূর্ব বিজয় অর্জন করার পরে বঙ্গবন্ধুর উত্থানকে রোধ করার জন্যে পাকিস্তান তাদের এদেশীয় দোসরদের সাথে নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করে। ৭১ এর ২৫ মার্চ ঝাপিয়ে পড়ে এদেশের নিরীহ মানুষের উপর। গণহত্যা চালিয়েও যখন বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন রোধ করা সম্ভব হচ্ছিল না, তখন এদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে ১৪ ডিসেম্বর তালিকা তৈরী করে এদেশের সূর্য সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। সকল ষড়যন্ত্রকে উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধু যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে তাঁর মেধা প্রজ্ঞা ও দূরদর্শীতা দিয়ে সোনার বাংলা’য় পরিণত করছিলেন। ১৯৭৪ সালে দেশের অর্জিত প্রবৃদ্ধি ছিলো নয় শতাংশ। বঙ্গবন্ধুর সফল নেতৃত্বকে স্তব্ধ করে দিতে ৭৫ সালে স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ষড়যন্ত্রকারীরা। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে তারা এদেশকে পিছিয়ে দেয়া হয়। দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের ফসল হিসেবে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে এসে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত ‘সোনার বাংলা’ গড়ার কাজ শুরু করেন। ষড়যন্ত্রকারীরা ২০০৪ সালে আবার সক্রিয় হয়। ঐ সময়ের সরকার প্রধান খালেদা জিয়া এবং হাওয়া ভবন থেকে তারেক জিয়ার আশ্রয় প্রশ্রয়ে এবং তাদের নির্দেশে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চক্রান্ত করে। ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে হত্যা করে এদেশের স্বাধীন সার্বভ্রৌম অবস্থানকে বিনষ্ট এবং দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করে দিতে চেয়েছিল। ভাগ্যক্রমে সেদিন জননেত্রী শেখ হাসিনা বেঁচে যান। ঐদিন তিনি বেঁচে যাওয়াতে বাংলাদেশ আজ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর আজন্মলালিত ‘সোনার বাংলা’র আধুনিক রুপ ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ দৃশ্যমান হয়েছে। সারাবিশ্বে এদেশের উন্নয়ন শুধু প্রশংসিতই নয়, অনুসরণীয় হয়ে উঠেছে।
পলক বলেন, ১২ বছর ধরে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকলেও জননেত্রী শেখ হাসিনা এখন নিরাপদ-একথা বলা যাবে না। রাষ্ট্রবিরোধী অপশক্তি এখনো ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ এবং সজাগ থাকতে হবে। সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে জননেত্রী শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন পলক।
প্রতিমন্ত্রী অনতিবিলম্বে গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে অভিযুক্ত হয়ে বিদেশে পালিয়ে থাকা ঘাতকদের দেশে ফিরিয়ে আনা এবং মামলার রায় কার্যকর করার দাবী জানান।
সিংড়া পৌর যুবলীগের সভাপতি শরিফুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা আওযামী লীগের সভাপতি ও নাটোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, বিশেষ অতিথি নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল, সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট ওহিদুর রহমান শেখ প্রমুখ।