‘মোহিনী ট্যুরিস্ট ক্লাব’-এর জন্মকথা
কাজী মোহিনী ইসলাম
বাংলাদেশ ও দেশের পর্যটন শিল্পকে অকৃত্রিম ভালোবেসে স্বপ্ন দেখতাম, এই শিল্পের মাধ্যমে আমাদের অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ঐশর্যময়ী প্রিয় মার্তৃভূমি একদিন বিশ্ব পর্যটকের চোখে অনন্য মর্যাদার সুউচ্চ শিখরে পৌঁছাবে। দেশের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে নিজের সাধ্যমতো নানামুখী কাজ করছি দীর্ঘ সময় ধরে। সেই ২০০৫ সাল থেকেই ‘ঢাকা ভিশন ট্যুরিস্ট গাইড’ প্রকাশ করে আসছি। যা আমাদের দেশের পর্যটকদের ভ্রমণ সহায়ক গাইড হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখে আসছে। এছাড়া ভ্রমণ ও পর্যটন বিষয়ক ইংরেজী সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘দি ম্যাসেজ বাংলাদেশ’ প্রকাশের মধ্য দিয়ে পর্যটন সাংবাদিকতা ও পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। ইতিমধ্যেই যুক্ত হয়েছি বাংলাদেশ ট্যুরিজম রিসার্চ ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম উইমেন এন্টারপ্রেনারস এসোসিয়েশন (বিটিডব্লিউইএ)-এর সাথে।
আমার সাহিত্য চর্চায়ও নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে পর্যটন। সম্মিলিত পর্যটন জোট, পর্যটন সমবায় সমিতি এবং মাই টিভি’র পর্যটন বিষয়ক অনুষ্ঠান ‘মাই ট্যুরিজম’ এর থিম সং রচনা, সুরারোপ ও কণ্ঠদান করেছি। এছাড়া ‘তোমায় দেখে দেখে, ঠাকুর বাড়ির সেই ছেলেটি হয়েছে বিশ্বকবি’ শিরোনামে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও পর্যটন বিষয়ক একটি গান ইউটিউব চ্যানেলে রিলিজ হয়েছে। নিজের লেখা ও সুরে গানটি নিজেই গেয়েছি। এ গানটি ইতিমধ্যেই শ্রোতাদের ভালোবাসা পেয়েছে। লিখছি পর্যটন বিষয়ক উপন্যাসও। করোনার মহামারীর আগমনে ২০২০ সালের মার্চে শ্বাসরুদ্ধকর লকডাউনে প্রথম যখন ঘরবন্দি হলাম, তখন জীবনকে নতুন করে উপলব্ধি করলাম। যেনো এক জীবনের ভেতর আরেক জীবনের সন্ধ্যান পেলাম। সত্যিকার অর্থে যদি ঘরবন্দি না হতাম, তাহলে প্রকৃতির কাছে ছুটে যাওয়ার তীব্র-তৃষ্ণা অনুভব করতে পারতাম না। জানতামই না, ভ্রমণের মধ্যেই লুকিয়ে আছে মুক্তির আনন্দ! আর এই আনন্দকে চিরসঙ্গী করার জন্যই ভ্রমণ নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিলাম। উদ্যোগ নিলাম ‘মোহিনী ট্যুরিস্ট ক্লাব’ গড়ে তোলার। খুব কাছের কিছু মানুষের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করি। কেউ কেউ বললেন, সারা পৃথিবী যখন ঘরবন্দি, তুমি তখন ভ্রমণ-উদ্যোক্তা হচ্ছো? বিষয়টা কি হাস্যকর ও অস্বাভাবিক নয়!
সে সব প্রিয়জনদের বলেছি, করোনাকালীন এই লকডাউন সত্যিকার অর্থেই আমাদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছে, জীবনের বিভিন্ন জটিলতায় আমরা অনেকেই মানসিকভাবে নিজের চিন্তার ভার বইতে অক্ষম হয়ে পড়েছি এখন। এ অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য ডাক্তারের স্মরণাপন্ন হচ্ছি। কিন্তু তাতে আমাদের শরীর সুস্থ্য হলেও মন সুস্থ্য হয়ে উঠছে না। প্রকৃত অর্থে প্রকৃতির কাছেই রয়েছে আমাদের মন ও মননের প্রতিষেধক। মনের ভেতর জমে থাকা বিষণ্ণতার বিষবাষ্প থেকে মনকে মুক্ত করতে হলে প্রকৃতির সান্নিধ্যে যাওয়া অনিবার্য। তাই ‘জীবনভর করি ভ্রমণ, সুস্থ্য রাখি দেহ-মন’ এই মর্মবাণীকে ধারণ করে ‘মোহিনী ট্যুরিস্ট ক্লাব’-গড়ে তুললাম। অনেকেই শুধুমাত্র ফেসবুকে একটি পেইজ খুলেই ট্যুর অপারেটিং করছে। কিন্তু আমি বরাবরই দেশের প্রচলিত আইন ও বিধি-বিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ‘মোহিনী ট্যুরিস্ট ক্লাব’-এর কার্যক্রম শুরুর আগেই লাইসেন্স করে নিয়েছি। মোহিনী ট্যুরিস্ট ক্লাব আন্তরিকভাবে চেষ্টা করবে মায়ের মমতামাখা যত্নের সাথে প্রিয় পর্যটকদের সেবা দিতে। প্রকৃতিপ্রেমী ভ্রমণপিপাসু পর্যটকের কাছে আস্থা, বিশ্বস্ততা ও নিরাপদ ভালোবাসার প্রতীক হয়ে ওঠবে মোহিনী ট্যুরিস্ট ক্লাব।
আমরা এই মুহুর্তে লকডাউন মুক্ত। খুলে গেছে বাংলাদেশের সমস্ত পর্যটন গন্তব্য। মোহিনী ট্যুরিস্ট ক্লাবের কার্যক্রমও পুরোদমে শুরু হয়েছে। সবার প্রতি বিনীত অনুরোধ, মোহিনী ট্যুরিস্ট ক্লাবের সঙ্গে ভ্রমণ করুন। আমাদের আন্তরিক সেবা নিন। পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে সাথে থাকুন।
পরিশেষে আবারও বলি-
‘জীবনভর করি ভ্রমণ
সুস্থ্য রাখি দেহ-মন!’
কাজী মোহিনী ইসলাম
প্রেসিডেন্ট এ্যান্ড সিইও
মোহিনী ট্যুরিস্ট ক্লাব