কবি শতক আরিফ এর “তুমি হ্মমা কোরো আমাকে নারী”
তুমি হ্মমা কোরো আমাকে নারী
নিজেকে হারিয়ে রাহ্মুসে উদরটাকে অন্ন ভরে দিতেই তুমি বিবস্ত্র হয়েছিলে সেদিন…
নিজেকে বাঁচাতেই তুমি গতর খাটিয়ে শ্রম বিলিয়েছিলে নিষ্ঠার সাথে….
পুরুষতান্ত্রিক অনিষ্ঠ এই সমাজ সংসার
তোমাকে পতিতা বানিয়েছিল তবু দ্বিধাহীন —
কুলাটা নামে আখ্যা দিয়েছিল তোমাকে তারা নির্লজ্জের মত–
অথচ হ্মুধার জ্বালায় জ্বলতে জ্বলতে ছেঁড়া কাপড়টাকে গায়ে জড়িয়ে- যখন তুমি অসহায় গৃহবন্দিনি
তখন কিন্তু তোমাকে তারা কেউ দেখেনি
কারো নজরে আসোনি তুমি,,
না সমাজ, না সংসার
না অলৌকিক শক্তির অধিকারি কোনো স্বর্গীয় দেবতার অন্তর চহ্মুতেও ভাঁসনি তুমি সেদিন
কেউ দেখেনি তোমাকে —
তোমার খবরও জানেনি কেউ….
আদিম বর্বর অপয়া এই অনিষ্ঠ সমাজ সংসারে তুমি বারবার কুলষিতা
শতবার লাঞ্ছিতা , বঞ্চিতা তুমি এখনো–
জীবনে কুলাটা হয়ে পতিতা নামে কলঙ্কের দ্বায়ভার মাথায় নিয়ে মুখ থুবরে বাঁচতে বাঁচতে যখন তুমি মরে গেলে,, তখনও সেখানে তোমাকে নরকের খড়ি বানিয়ে আগুনে পুড়িয়ে সেখানকার স্থায়ী বাসিন্দা বানাতে প্রস্তুত ওরা…
ওরা বেহায়া বেলজ্জা সব দেবতারা দাঁড়িয়ে,,
পাপ পূর্ণের পান্ডুলিপি হাতে ওরা
বেহায়া বেলজ্জা সব দেবতারা মার্কিন কাপড়ে মোড়ানো তোমার শব দেহটার সামনে দাঁড়িয়ে–
তুমি মরনের পরেও তখন নরকের আগুনে জ্বলবে দাউদাউ–
তুমি অসম্মানিত হচ্ছো গিয়ে সেখানেও….
তোমাকে নরকে পাঠাচ্ছেন ওরা নরকীয় সব উদ্ভট কিছু মহাশক্তিধর অহ্মম দেবতারা–
তুমি হ্মমা কোরো আমাকে নারী
আমিও যে পুরুষ…
আমিও হয়তো কাপুরষ…
আমিও যে অমানবিক নিষ্ঠুর বর্বর এই জঘন্য সমাজ সংসারের অংশীদার —
দেবতাদের দয়ার দানে আমিও যে ওদের অনিয়মে বাঁধা নিশ্চিত এক নিকৃষ্ট ধিক্কার
আমিও একজন নির্মম বাসিন্দা এই অপয়া সমাজ সংসারে–
তুমি হ্মমা কোরো আমাকে নারী ।।