দোষ কার পরীমনি-পিয়াসাদের নাকি লিভিং পার্টনারদেরও? নাকি কারোরই না…-শামীমা সুলতানা লাবু
একজন প্রাপ্তবয়ষ্ক ব্যক্তি নারী-পুরুষ যেই হোন না কেন, তিনি সততার সাথে নিজের সঙ্গী বেছে নেবার অধিকার রাখেন। কে কার সাথে থাকবেন, কে কার সাথে থাকবেন না, সেটাও তার/তাদের একান্তই ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। মোটকথা এটা ব্যক্তির অধিকার। এটা ব্যক্তির স্বাধীনতা।
যদিও প্রচলিত আইন বা ধর্ম গুলোতে এনিয়ে একেক রকম মতভেদ থাকতেই পারে।
আরেককটা বিষয়ে হয়তো অনেকেই একমত হবেন যে, এখনকার সমাজে প্ল্যাটুনিক লাভ বা প্যাসোনেট লাভ নাই বললেই চলে, love এর চেয়ে lust এর আধিক্য বেশি। একাধিক প্রেম/বিয়ে/পরকীয়াও বেশি।
এই যে যৌনতার উল্লম্ফন তা তো কেবল নারী একা একা করছে না। এতে ধর্ম-বর্ণ-জাতি নির্বিশেষে নারী-পুরুষ উভয়েরই অবদান বা দায় দুটোই আছে।
অথচ সামাজিকভাবে ঘটা করে যদি এমন কোন সর্ম্পকের কথা মানুষ জানতে পারে, তখন সাধারণত দুই ধরণের প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়ঃ-
প্রথমত যে নারী এক বা একাধিক বিয়ে বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্কে জড়িত, তাকে পতিতা হিসেবে কটাক্ষ করে।
কিন্তু যে পুরুষ এক বা একাধিক বিয়ে বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্কে জড়িত, তাকে নিশ্চয়ই ভুলিয়ে -ভালিয়ে এমন সম্পর্কে জড়ানো হয়েছে। (যেন সকল পুরুষরা নান্না-মুন্না বাচ্চা,কিচ্ছু বোঝে না)
এর বাইরে শব্দচয়নগতও একটা বৈষম্য লক্ষ্য করা যায়। এ সমাজ যৌনতাকে খাওয়া-খাইয়ির সাথে তুলনা করে। শুধু তাই নয়, এখানে প্রচলিত কথা হচ্ছে, পুরুষরা নারীকে বা নারীদেরকে “খেয়ে দেয়”। অর্থাৎ প্রকারান্তরে বোঝায়, নারী “খাদ্যবস্তু” আর পুরুষ “খাদক”।
দুঃখের বিষয় পুরুষপ্রধান এই আপ্তবাক্য, পুরুষরা তো ধারণ করেনই, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নারীরাও ধারণ করেন। তারা ভুলেই যান যে, যৌনতার স্বাদে লিঙ্গভেদ নেই, এটা উভয়পক্ষের জন্যই সমান।
মোদ্দাকথা হল, নারী-পুরুষের সম্পর্ক, সম্মান বা পারস্পরিক মিথষ্ক্রিয়া বিষয়ক এই ধরণের নোংরামোর চর্চা হাজার বছর ধরে সমাজে চলে আসছে। এই যুগে এসেও যারা ব্যক্তি স্বাধীনতা, নারী স্বাধীনতার কথা বলে মুখে ফেনা তুলেন, তাদেরকেও দেখি এ ধরণের মানসিকতা ধারণ করতে। এটাই দুঃখজনক।
অথচ নারী দিবস এলেই তারা বেগুণী রঙয়ের শাড়ি-পাঞ্জাবি পড়ে দাঁত কেলিয়ে একে অপরকে শুভেচ্ছা জানান। গদোগদো নারী স্বাধীনতার কথা বলে কিংবা কেক কেটে মুখে ফুলঝুরি ফোটান। পোশাকি/লোকদেখানো এসব খালি কলসিওয়ালাকেই সারাবছর দেখি সম্পূর্ণ উল্টো চরিত্রে।
তাই কোন ধরণের স্বাধীনতাই আসলে দিবস সর্বস্ব না। নোংরামো ছেড়ে বিষয়টা বুঝুন, মনে-মননে চর্চায় ধারণ করুন।
সূত্র- লেখক এর ফেসবুক ওয়াল থেকে সংগ্রহ করা।