Homeসাহিত্যদেবব্রত সুবীর এর একগুচ্ছ কবিতা

দেবব্রত সুবীর এর একগুচ্ছ কবিতা

অর্থহীন
দেবব্রত সুবীর
অর্থহীন জীবনের মাঝে
সবাই কেমন একটা অর্থ খোঁজে
কেউ কিছুই পায়না
সবাই যাপনের অহংকার নিয়ে চলে যায়।
সবাই যাবে এই সত্য জেনেও
অহংকার একটু দুরে গিয়ে
দেখতে চাও, দেখাতে চাও
আনেকটা এগিয়ে গেছি
এগিয়ে গিয়েই তো তুমি
একা হয়ে গেলে, নিরব হয়ে গেলে
তোমার নিরবতা
তোমাকে কুরে কুরে খাচ্ছে
তোমার ভয়ংকর একাকিত্বের
মাঝে তুমি নতুন নতুন হাত ধরছো
প্রচন্ড বিশ্বস হিনতা গ্রাস করছে তোমাকে
খুব নিরবে দীর্ঘ শ্বস গাড় হয়
কেউ নেই আসলে
কিছুই শান্তির স্বপ্ন নয়
বিষন্ন বিভ্রম এ কেটে যায়
সময় চলে যায় নিরর্থক
অর্থহীন জাীবন
জীবনের সব সম্পর্ক।
প্রকৃতি সত্য
গাছের মতো সত্য জীবন হয়নি আমাদের
যাপিত জীবনের চালাচল
বেঁচে থাকার আশা
প্রিয়তম অনুভূতি গুলো
সবই একটা সময় নিরর্থক হয়
এই যে আমাদের জীবন
পূর্ব পুরুষের কিছু
নিরর্থক অনুভূতি
বাহি যান
শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত আমরা
অর্পিত দায়িত্বের বাহক মাএ,
অর্থাৎ
জীবন
অর্থহীন।
ক্ষমতা
দেবব্রত সুবীর
তুমি একটু করে ক্ষমতা দেখাও
আর তুমি একটু করে নগ্ন হও
এবার তুমি সিদ্ধান্ত নাও
কতটা নগ্ন তুমি হবে বলো।
তুমি যদি তোমার সর্বোচ্চো ক্ষমতা দেখাও
তুমি আমার চোখে সর্বোচ্চো নগ্ন হও।
তুমি নগ্ন হয়ে নাচতে থাকো।
অসহায় হয়ে যাই আমি
তোমার নগ্নতা দেখার ইচ্ছা বা ধৈর্য্য
আমার নেই এখন।
তোমাদের দাম্ভিকতা আমাদের পিশে দিচ্ছে ,
তোমাদের ঔধত্য আমাদের কস্ট দিচ্ছে ,
তোমাদের উল্লাস আমাদের হৃদয় বিদির্ন করছে।
উৎস থেকে বহু দুরে গিয়ে তুমি ভাবছো
ওসবের প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে!
ক্ষমতা দেখাতে গিয়ে ক্রমাগত ভাবে তুমি
দুরে চলে যাচ্ছো, বহু দুরে।
যেখানে পৌছে গেলে আর ফেরা হয় না।
বিষণ ভয়ংকর রকমের এক অহমিকায়
সবাইকে খুবই ছোট মনে হয়।
আসলে এই যে আমার যারা এখনো
টিকে আছি তারা খুবই ছোট।
আর অসহায়ত্বের প্রতিক
প্রন্তিক আত্ননাদ পৌছায় না অতো দুরে।
জীবন আর কথা বলে না
একাকিত্বের ভয়ংকর অন্ধকার।
বিশ্বস হিনতার বীজ বপন করে হৃদয়ে
হেরে যাবার কলঙ্কিত হৃদয়
আর স্বপ্নে ভাসেনা
কি আশ্চর্য ক্ষমতা।
তোমার আমার মাঝে
অসম্ভব এক বিভেদর রেখা টেনে দিলো,
আমরা এক হলাম না আর।
প্রলয় নৃত্যরত হে আমার
তুমি এবার থামো এবং
নিজেকে একটু আমাদের কাছে আনো
শেষ বার বলছি তোমাকে
রক্তাক্ত হৃদয়ে সবটুকুন ভালোবাসা
পুড়িয়ে বলছি
কেন ভাবতে পারছো না তোমার ঐ
সুউচ্চ ইমারতের প্রত্যাকটি ইটই
খবই ছোট এবং খুবই শক্তিশালী।
তুমি আর তোমরা ঐ সব ইটের
উপর লবন ছিটিয়ে ছিটিয়ে
নিজেদের কতৃত্ব দেখালে
আমাদের হত্যার রক্তে কতটা
নোনা স্বাদে আচ্ছন্ন থাকো,
দেখতে চাইলে দাম্ভিকতায়
কেবলি ধসে যাচ্ছে হৃদয়
কেবলি অবিশ্বাস দানা বাধছে
কেবলি জীবন্ত লাশ গুলো জড়ো হচ্ছে
নগ্নতার আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি নিক্ষেপ
করতে করতে তুমি আমাদের অন্ধ করে দিচ্ছো
অন্ধকারের ভেতরে আমরা হাটছি
আর তুমি আমাদের কাঁধের উপর ভরে করে
দেখিয়ে যাচ্ছো ভাঙ্গনের কি ভীষণ খেলা
আমরা ভেঙ্গে যাচ্ছি
তীর দুরে সরে যাচ্চে।
প্রতিকুলতার ভেতরে দাঁডিয়ে আর অস্ত্র
তাক করতে পারছি না।
পৃথিবীর সমস্ত অহংকার নিয়ে তুমি
আমাদের কাঁধের উপর নৃত্যরত
জীবনের চোরাবলি আমাদের টানছে
পৃথীবির খুব কাছে
তোমাদের তথাকথিত দৃষ্টিসীমার
অনকে নিচে অনেক নিচে
আমাদের নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে
আমরা ডুবে যাচ্ছি
চোরাবলি তার সমস্ত শক্তি নিয়ে টানছে
আমরা ডুবে যাচ্ছি ।
তোমরা কেবল ফঁসির দড়ি হাতে মাথার উপর ঘোরালে
সে দড়ি আমাদের চোরাবলি থেকে বাঁচালো না।
কি অশ্চর্য সময় এক
তুমি কেবল চশমা এটে থাকলে
এই সব আত্নর্নাদ কেবলি
অস্ফুট শব্দ হয়ে থাকলো
তোমাদের হৃদয়ের রেখা অতিক্রম করলো না
তোমরা দেখালে আর
আমরা আগেই অন্ধ হয়ে গিয়েছিলাম
কস্টে ঈশ্বর আমাদের
চোরাবলিতেই শেষ করে দিলেন।
২৩/০৭/২১
মিথ্যা
দেবব্রত সুবীর
উট পাখির মতো
আর কত পালাবে বলো।
সমনে এসো
প্রতিবাদ করো
তোমার ক্ষুধার পক্ষে কথা বলো।
তুমি নিজেকে বিশ্বাসী হিসেবে
ঘোষণা করেছো।
তাহলে পারছো না কেন
কেন হৃদয় বিষ্ফোরিত হচ্ছে না।
লোভের পক্ষে বিশ্বাস।
বিশ্বাসের হৃদয় কোথায় থাকে জানো?
না এসব জানবার কথাও না
জেগে উঠবার জন্য
প্রয়োজন চোখ মেলা।
তুমি তো অন্ধ
লোভের পক্ষে যে বিশ্বাস তোমার
তুমি ঠাঁয় বোসে থাকো মিথ্যা বৃক্ষের ছায়ায়।
তোমাকে শান্তনা দেয়
দাসত্বের শৃঙ্খল পড়ায়।
মিথ্যার আস্ফালনের চিৎকার শুনে শুনে
আরো বিশ্বাসী হয়ে উঠো।
লোভে বিশ্বাস পোক্ত হয়
মুক্তি মেলে না আর।
অধিকার
দেবব্রত সুবীর
তুই ভাবলি
তুই ই সঠিক
আচ্ছা ঠিক
তুই কি বুঝলি
তুই ভাবলি তোর পৃথিবী
আচ্ছা তোরই পৃথিবী।
ঠিক আছে তো।
তোর স্বর্গ
আচ্ছা
তুই যাবি
যা
তুই ভাবলি আমি
নরকে যাবো
আচ্ছা গেলাম।
আমি তো তোর কিছুতেই
ভাগ চাইনা।
পৃথিবীর নিকৃষ্ট তম
কোন কিছুতেই
আমি আমার
অধিকার নেই।
প্রথম দুঃখ
দেবব্রত সুবীর
হে আমার মহামন্য আমি ভিষণ অপরাধী
আপনার আদালতে স্বীকার করছি
এখন আপনি আপনার ব্যবস্থা গ্রহন করুন
আপনি দড়িতে কলা আর ঘি মাখানোর নির্দেশ
প্রদান করুন,
পেয়াদারা প্রস্ততি নিক
রুমাল ধুয়ে রেডি হোক।
আনুষঙ্গিক কর্মের ভেতরে
নেশার ভয় লাগুক।
আমার প্রতি আপনার ভালোবসার অশ্র ঝড়ুক,
আমার চোখের বিচ্ছুরন আপনার
হৃদয় বিদির্ন করুক।
ফাঁসি তার আনন্দ উপোভোগ করুক
ঝুলে যাক কিছু জ্বলন্ত আগুন।
প্রিয়তমার মুখই হয়তো মনে পড়বে,
পিতার মৃত্যু উৎসর্গ হোক
জীবনের উৎসবের উপলক্ষ।
হত্যাকারী অনন্দ উপোভোগের ভালোলাগা জড়িয়ে থাকুক
সকল কর্মে।
আমি ও আমাদের স্বপ্নের বেঁচে থাকার পথ
আগেলে রাখুক সময়ের দাবী।
জীবন যেখানে সত্য
ভয়ংকর মিথ্যার আস্ফালন সেখানে জয়ী।
আমার হারিয়ে যাবো যে পথে
সেখানে আকাঙ্ক্ষার অন্ধকার আলো হয়ে
জ্বলুক হৃদয়ে।
জীবন অন্ধকারের ভেতরে
ডুব দিয়ে দেখুক কিছু পায় কি না।
১৭/০৮/২১
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments