নাটোর নিউজ: করোনা ভাইরাসের টিকা নিতে নাটোর আধুনিক হাসপাতালে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।এখানে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো প্রবণতা দেখা যায়নি। মানুষের গাদাগাদিতে অনেকেই কোভিড-১৯ টিকা নিতে না পেরে বাড়ি ফিরে গেছেন বলে জানান স্থানীয়রা। ফলে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।
করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর থেকে নাটোর জেলার সাধারণ মানুষের মাঝে টিকা নেয়ার আগ্রহ বৃদ্ধি পেতে থাকে। কেউ দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেয়ার ম্যাসেজ পেয়ে আসছেন, আবার অনেকে ম্যাসেজ না পেয়েও ভীড় করছেন হাসপাতালে? এ অবস্থায় বেশ কয়েক দিন ধরে টিকার প্রথম ডোজ ও দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার জন্য নাটোর আধুনিক হাসপাতাল এবং বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন বিএমএ ভবনে মানুষের উপস্থিতি বেশি হওয়ায় টিকা প্রদানে ডাক্তার ও নার্সদের হিমশিম খেতে দেখা গেছে।
আজ সোমবার সকাল ১০টা থেকে নাটোর আধুনিক হাসপাতাল এবং বিএমএ ভবন কেন্দ্রে টিকা কার্যক্রম শুরু হয়। তবে সেখানে সকাল সাতটা থেকে টিকা নিতে আসা মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, নাটোর আধুনিক হাসপাতালে দুটি বুথে এবং পুলিশ লাইনের একটি বুথে করোনার টিকা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। পুলিশ লাইন কেন্দ্রে মানুষের ভিড় বেশি হওয়ায় সোমবার কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া হয় ।
সরেজমিন সকাল ১০টায় গিয়ে দেখা যায়, বিএমএ ভবনে পুরুষদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। কক্ষ থেকে শুরু হওয়া লাইন হাসপাতাল কোয়াটার প্রাঙ্গণে মাঠ এঁকেবেঁকে একেবারে প্রধান ফটকের বাইরে চলে গেছে। বাইরে ও সামনের সড়কেও এক শ থেকে দেড় শ মানুষের দীর্ঘ লাইন। আর হাসপাতাল ভবনে নারীরা দুই তিন লাইনে দাঁড়িয়ে আছে । সব মিলিয়ে অন্তত তিন হাজার মানুষ আজ টিকা নিতে এই দুটা কেন্দ্রে এসেছেন।
টিকে নিতে আসা গৃহবধু আসমা বেগম ও রাবেয়া খাতুন বলেন, ছোট ছোট বাচ্চাগুলোকে বাসায় রেখে সকাল ৯ টায় এসেছিলাম। তিন ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে একটু আগে টিকা দিতে পারলাম। তবে ব্যাপক ভিড়, ধাক্কাধাক্কি; এবং ব্যাপক ব্যবস্থাপনার অভাব বোধ করলাম।
বিএমএ ভবনের সামনে টিকা নিতে আসা আব্দুল আজিজ (৭৪) ও মজনু মিয়া (৬৫) জানান, টিকা নিতে এসেছি সকাল ৯ টায় এখন বাজে ১২ টা । তখন থেকে দেখছি এখানে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো প্রবণতা নেই । ফলে, এখান থেকেই করোনা ছড়ানোর সম্ভাবনা বেশি । অতিদ্রæত বুথ বা কেন্দ্রে বাড়ানো উচিত ।
সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক কর্মকর্তা মঞ্জুরুল ইসলাম জানান,আগের তুলনায় টিকা গ্রহণে আগ্রহীর সংখ্যা বাড়ছে। মানুষের মনে যে শঙ্কা ছিল তা দূর হয়ে গেছে। সরকার বয়স সীমা ৩৫ করার পর মানুষের মধ্যে আরও আগ্রহ বেড়েছে। সুশৃঙ্খলভাবে ধৈর্য ধরে দাঁড়ালে সবাইকে আমরা টিকা দিতে পারব।
এ বিষয়ে নাটোরের জেলা সিভিল সার্জন কাজী মিজানুর রহমানন এর মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।