আসুন প্রতিজ্ঞা করি!
জাকির তালুকদার
গত পরশু করোনা ছিনিয়ে নিয়েছে দেশের সত্যিকার কবিসত্তার একজন কবি নূরুল হককে। গতরাতে চলে গেলেন ফকির আলমগীর। তার আগে হারিয়েছি মুর্তজা বশীরকে। করোনা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে দেশের সাহিত্য-সংস্কৃতি জগতের অন্তত পঁচিশ জন সৃষ্টিশীল ও সক্রিয় পুরোধা ব্যক্তিকে।
প্রত্যেক মৃত্যুর পর আমাদের গৎবাঁধা বুলি হচ্ছে– তাঁর শূন্যতা কোনোদিন পূরণ হবে না।
এখানেই আমাদের প্রতিজ্ঞার কথাটি আসে।
আমরা যারা এখনো বেঁচে আছি, আসুন প্রতিজ্ঞা করি– আমরা তাদের শূন্যতা পূরণ করব! তাঁরা যেখানে পৌঁছে শেষ করেছেন, আমরা সেখান থেকে এগিয়ে চলব। কবিতায়, গল্পে, উপন্যাসে, চিত্রকলায়, নাটকে, সঙ্গীতে, গবেষণায়, সব সৃজনশীল ও মননশীল সৃষ্টিকর্মে আমরা যতদিন বেঁচে থাকব, নিজেদের সর্বোচ্চ নিবেদন করব।
নিজেদের কাজের উৎকর্ষ বৃদ্ধি করার জন্য আরো বেশি পরিশ্রম, অধ্যবসায়, অধ্যয়নে মনোযোগী হবো। তাৎক্ষণিক হাততালি ও লাইক পাওয়ার মতো আবর্জনা সৃষ্টির পরিবর্তে আত্মনিয়োগ করব সত্যিকারের সৃজনকর্মে।
এটি তখনই সম্ভব যখন আমরা প্রত্যেকেই নিজেদের সৃষ্টির যথার্থ সমালোচক হয়ে উঠতে পারব। যখন আমরা বুঝতে শিখব, আমাদের কোন সৃষ্টি জনসমক্ষে আনার যোগ্য, আর কোনটি যোগ্য নয়– তখনই বুঝব আমরা নিজের সৃষ্টির সমালোচক হয়ে উঠতে পেরেছি।
জাহান্নামে যাক আমাদের শাসক-চালকরা। ওদের সবগুলোকে একপাল্লায় তুলে আরেক পাল্লায় একজন আরজ আলী মাতুব্বরকে তুললে, শেষের পাল্লাই অনেক বেশি ভারি হবে।
আসুন আমরা সত্যিকারের সৃষ্টির মাধ্যমে জাতির প্রতি, বিশ্বের প্রতি আমাদের দায়িত্ব পালন করে যাই। তা করতে পারলে করোনা আমাদের মৃত্যু ঘটাতে পারবে, কিন্তু হারাতে পারবে না।