গান গেয়ে মানুষকে স্বাস্থ্য সচেতন করছেন অন্ধ বাউল মানিক চাঁন দেওয়ান
কালিদাস রায়, নাটোর নিউজ:
“স্বাস্থ্যবিধি মেনে চল হেলা কইরো না, ঘাতক ব্যাধি করোনা কারো আপন না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করছে ঘোষণা। শোন শোন নগরবাসী, শোন আমার গান, মহামারি করোনা নিতে পারে জান।” করোনাকালীন কঠিন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে সুরেলা কন্ঠে এমন গান গেয়ে জনসাধারণকে সচেতন করে চলেছেন নাটোরের সিংড়া উপজেলার অন্ধ বাউল শিল্পী মানিক চাঁন দেওয়ান। করোনাকালীন সময়ে তার কাজই যেন হয়ে উঠেছে করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে গান করা।
অন্ধ বাউল শিল্পী মানিক চাঁন দেওয়ান নাটোরের সিংড়া উপজেলার একটি পরিচিতি মুখ। গান গেয়েই যার পরিচয়। সিংড়া উপজেলার মহেশচন্দ্রপুর গ্রামে পাউবো’র জমিতে চার কন্যা ও স্ত্রী নিয়ে বসবাস করেন তিনি। জমিজমা ভিটেমাটি কিছু নেই। ২০১৯ সালে সিংড়া উপজেলার সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো তাকে মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উপহার গৃহহীন-ভ‚মিহীনদের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতাধীন ঘরের বন্দোবস্ত করে দেন। প্রথম দিকে ভিক্ষে করে সংসার নির্বাহ করতেন। ২০১৪ সালে স্থানীয় সংসদ সদস্য আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক তাকে প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা করে দেওয়ার পরে ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে দেন। কিন্তু গানের প্রতি অদম্য ঝোঁক, অধ্যাবসায় ও ভালবাসার কারণে দোতারা আর গানকেই শেষ সম্বল হিসেবে ধরে নিয়েছেন। তার সুরেলা কন্ঠে গান শুনে দর্শক শ্রোতারা বিমহিত হন। হাটে বাজারে, পথে-প্রান্তরে গান গেয়ে যা পান তাই দিয়েই তার সংসার চলে।
মানিক চাঁন দেওয়ান জানান, ‘জন্মের ৭ বছর পর টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হন তিনি। তারপর থেকে অন্ধ হই। চিকিৎসা করার মত অর্থ ছিলো না। দীর্ঘদিন ভিক্ষে করতেন, ভিক্ষে না করলে ভাত জুটতো না। বর্তমানে তার সংসারে ৪ কন্যা সন্তানের মধ্যে এক কন্যাকে বিয়ে দিয়েছেন। বাকী তিন সন্তান লেখাপড়া করছে।
মানিক চাঁনের মনে বড় আশা ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র মাধ্যমে তার গান বিশ্বে ছড়িয়ে পড়–ক। অন্ধ বাউল মানিক চানের সে আশা কি পূরণ হবে?