গুরুদাসপুর,নাটোর নিউজ: নাটোরের গুরুদাসপুরে কাঙ্খিত বৃষ্টিপাতের অভাবে জলাশয়গুলো ভরাট না হওয়ায় পাট জাগ দিতে না পারায় কৃষকরা পড়েছেন মহাবিপাকে। ফলন ভালো এবং বাজার দর ভালো থাকায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটলেও সময়মত পানি না পাওয়ায় পাট জাগ দিতে পারছেন না তারা। এ দুশ্চিন্তায় কৃষকদের মনে ঈদের আনন্দও নেই।
জানা যায়, এবার গুরুদাসপুর উপজেলায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। গত বছর ৩৪৫০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হলেও এবার হয়েছে ৩৮৫০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু ভারী বর্ষণ না থাকায় অনেক কৃষক পাট কাটতে চাচ্ছেন না। আবার অনেকে পাট কেটেও জমিতে ছিটিয়ে বা স্তুপ করে রেখেছেন। কেউ কেউ শ্যালো মেশিন দিয়ে পানির ব্যবস্থা করলেও তাতে বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে। নিশ্চিত লাভ জেনেও পানির অভাবে কৃষকের স্বপ্ন অধরা থেকে যাচ্ছে। এমনিতেই পাট চাষে অনেক পরিশ্রম ও অর্থ ব্যয় হয়। পঁচা পানিতে আঁশ এড়ানো শ্রমিকদের মজুরীও বেশি।
উপজেলার সিধুলী গ্রামের পাটচাষী মোজাম্মেল ও উদবাড়িয়া গ্রামের তহিদুল ইসলামসহ অনেকে জানান, এবার বৃষ্টিপাত কম, পাট জাগ দিতে পারছিনা। তাছাড়া নদীতে পাট জাগ দিতে গেলে আনা নেওয়ার খরচ উঠবে না। আশপাশে শ্যালো মোটরের ব্যবস্থা না থাকায় সেচের পানিও পাচ্ছিনা।
চাঁচকৈড় বাজারের পাট ব্যবসায়ী আব্দুল খালেক মোল্লা জানান, বর্তমান বাজারে পাটের সরবরাহ খুবই কম। নতুন পাট ২৫০০ থেকে ২৭০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশিদ বলেন, দুই সপ্তাহ আগে বৃষ্টিপাতে নন্দকুজা, আত্রাই নদীসহ বিভিন্ন খালে পানি ভরাট হওয়ায় কৃষকরা তাদের সোনালী আঁশ পাট কাটতে শুরু করেন। কিন্তু এরপর আর বৃষ্টিপাত না হওয়ায় খরায় পানি শুকিয়ে যায়। ফলে পাটের বাম্পার ফলন হলেও পানি সংকটে পড়েছেন কৃষকরা। তবে আবহাওয়া অফিসের দেওয়া তথ্যমতে, আজকালের মধ্যেই টানা কয়েকদিন ভারী বৃষ্টিপাত হবে বলে জানা গেছে।
এ চিত্র শুধু নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় নয়,বড়াইগ্রাম, বাগাতিপাড়া, নাটোর সদর , লালপুর উপজেলাতেও পানি সংকটে পাট জাগ দিতে না পারায় কৃষকরা পড়েছেন মহাবিপাকে। পানি সেচ অথবা অনেক দূরের জলাশয় ভাড়া নিয়ে পাট জাগ দিতে খরচ বেশি পড়ছে। এতে পাট চাষে এবছর লস হবে বলে মনে করছেন চাষিরা। সরকারী সহায়তা ও প্রনোদনার দাবি তাদের।