আরিফুল ইসলাম, নলডাঙ্গা, নাটোর নিউজ : নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার প্রায় তিন লাখ মানুষের জন্য একমাত্র ভরসা হবে ৫০ শয্যার নলডাঙ্গা উপজেলা হাসপাতাল। উদ্বোধনের জটিলতা থাকার কারণে আধুনিক সরঞ্জাম থাকায় পর ও সব ধরনের চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই চিকিৎসার জন্য নাটোর কিংবা রাজশাহী যেতো হয় রোগীদের। এতে একদিকে যেমন ভোগান্তি, অন্যদিকে নানা বিরম্বনায় পড়তে হচ্ছে রোগীদের। এবং স্বাস্থ্য সেবা হতে বঞ্চিত হচ্ছে নলডাঙ্গাবাসী।
তবে খুব শিগগিরই চালু হতে যাচ্ছে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার ৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল। চলতি জুলাই মাসের যে কোনো দিন হাসপাতালটি উদ্বোধন হতে পারে বলে জানিয়েছে নাটোরের নবাগত জেলা প্রশাসক মোঃ শামীম আহমেদ। আর এটি চালু হলে উপজেলার ৩ লাখ মানুষ চিকিৎসা সেবা পাবে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের আর রাজাশাহী-নাটোর সদর যেতে হবে না।নিজ উপজেলাতেই পাওয়া যাবে আধুনিক চিকিৎসার সব সুযোগ-সুবিধা।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, নলডাঙ্গার মানুষের উন্নত চিকিৎসা সেবার কথা বিবেচনা করে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও (নাটোর সদর-নলডাঙ্গা) আসনের এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুল একান্ত প্রচেষ্টায় নলডাঙ্গায় ৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের অনুমোদন হয়। এরপর নলডাঙ্গা উপজেলা চত্বরের পাশে নলডাঙ্গা ৫০ শয্যার হাসপাতাল চত্বরের এক একর জমির ওপর ২০১৮ সালের দিকে প্রায় ৪২ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয় চতুর্থ তলা বিশিষ্ট অত্যাধুনিক ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এই বছরের মে মাসে হাসপাতাল কাজ সম্পূর্ণ হয়। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মাহবুবুর হোসেন জানান, এই হাসপাতালটিতে লিফট সুবিধা রয়েছে। জরুরি রোগী আনা-নেওয়ার জন্য দু’টি অ্যাম্বুলেন্স থাকবে। এতে মেডিসিন বিভাগ, সার্জারি বিভাগ, একটি অর্থোপেডিক্স বিভাগ, একটি নাক-কান-গলা ও একটি শিশু বিভাগ, একটি স্কিন বিভাগ, একটি গাইনি বিভাগ, একটি পোস্ট অপারেটিভ বিভাগ, একটি ডায়রিয়া ও একটি কার্ডিওলজি বিভাগ থাকবে। হাসপাতালে নিজস্ব জেনারেটর ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। হাসপাতালে গাইনি, জেনারেল সার্জারি, অর্থোপেডিক্স, চক্ষু ও নাক-কান-গলার অপারেশনের ব্যবস্থা রয়েছে।
সমাজসেবক অধ্যাপক ডক্টর জিয়াউল হক জিয়া বলেন আধুনিক হাসপাতাল সম্পূর্ণ থাকার পরও চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ থাকার পরেও আমাদের নলডাঙ্গার মানুষকে নাটোর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যেতে হচ্ছে এই দুর্যোগের সময় বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে। সোনাপাতিল গ্রামের মজিবর রহমান বলেন, নলডাঙ্গায় পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল থাকার পরেও নাটোর কিংবা রাজশাহী তে মানুষকে চিকিৎসা সেবা নিতে হচ্ছে। তাই মানুষকে চিকিৎসা সেবা নিয়ে দুর্ভোগে পড়তে হয়।
নলডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মনিরুজ্জামান মনির বলেন,৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল চালু হলে খুব সহজেই দূর-দূরান্তের রোগীরাও চিকিৎসা সেবা নিতে পারবে। এটি নলডাঙ্গা মানুষের ভরসাস্থলে পরিণত হবে।
নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি জনবল সহ খুব অচিরেই হাসপাতাল চালু হবে।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, করোনা মহামারী সময় নলডাঙ্গা হাসপাতালের কাজ শেষ হবার পরেও একটি প্রভাবশালী মহলের কারণে উদ্বোধনের অজুহাতে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে নলডাঙ্গাবাসীকে। এটা মোটেই কাম্য নয়।
নাটোর সিভিল সার্জন ডা.কাজী মিজানুর রহমান জানান, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই স্বাস্থ্য বিভাগকে ভবন বুঝিয়ে দেওয়া হলেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হবে। প্রশাসনিক অনুমোদন হলেই জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। এর পরেই উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করবে নাটোরে নলডাঙ্গা উপজেলার ৫০ শয্যার জেনালে হাসপাতালের কার্যক্রম। এ মাসেই হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হবে এটা মোটামুটি নিশ্চিত বলেও জানান তিনি।