গুরুদাসপুর, নাটোর নিউজ:
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের কাছিকাটা বাজারের গণশৌচাগারের (টয়লেট) সংস্কার কাজ ভালোভাবে সম্পন্ন করেও বিপাকে পড়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক মোস্তাফিজুর রহমান। উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধ থাকায় ওই কাজের বিল আটকে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু গণশৌচাগারটি নতুনভাবে নির্মানের কথা বলে সুনাম ক্ষুন্ন করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে দাবি করে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন ওই ইউপি চেয়ারম্যান। তবে সংস্কার কাজে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশল অধিদপ্তর এগ্রিমেন্টের কাগজে ভাষাগত ভুল করার কারণে এই ভুলবোঝাবুঝি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউএনও তমাল হোসেন।
মশিন্দা ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ওই গণশৌচাগার নিয়ে আমার সুনাম ক্ষুন্য করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। উপজেলা পরিষদের ভার্চুয়াল সভায় বিষয়টি তদন্তে আনা হয়। কাছিকাটা বাজারের গণশৌচাগারটি সংস্কারের বরাদ্দই পেয়েছি। ২০২০-২০২১ অর্থবছরের উপজেলা পরিষদের রাজস্ব উদ্বৃত্ত (উন্নয়ন) তহবিল থেকে ওই বরাদ্দ হয়। দরপত্রেও সংস্কারের কথাই উল্লেখ্য রয়েছে। সংস্কার কাজে কোনরকম ত্রুটি হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা সার্বক্ষণিক কাজ দেখেছেন এবং সকলেই প্রশংসা করেছেন। বরাদ্দের চেয়ে বেশি টাকা খরচ করে পুরোনো টয়লেটটি সংস্কার করা হয়েছে। ইউপি সচিবের পরামর্শে ওই প্রকল্পের সভাপতি হয়েছিলাম। উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে রাজনৈতিক বিরোধ থাকায় বিলটি আটকে দিয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী ওয়াহিদুজ্জামান মুঠোফোনে বলেন, গণশৌচাগারটি (টয়লেট) আগে থেকেই নির্মিত ছিল। উপজেলা পরিষদের সভায় গণশৌচাগাটির সংস্কার কাজ অনুমোদিত হয়। বরাদ্দ অনুযায়ী কাজের মান অনেক ভালো হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের রেজুলেশনেও সংস্কার কাজের কথা উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু এগ্রিমেন্টের সময় প্রিন্টিং মিসটেকের কারণে সংস্কার কাজের স্থলে নির্মান কাজ হিসেবে থাকায় একটা ভুলবোঝাবুঝি হয়েছে।
ইউএনও তমাল হোসেন বলেন, সোমবার উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভায় কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর ভাষাগত ভুল করার কারণে একটা মিস আন্ডারষ্ট্যান্ডিং হয়েছে মাত্র।
এদিকে উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের উপজেলা পরিষদের রাজস্ব উদ্বৃত্ত (উন্নয়ন) তহবিল থেকে উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের কাছিকাটা বাজার গোডাউন সংলগ্ন মাঠে নতুন একটি টয়লেট নির্মাণের জন্য ২ লাখ টাকার একটি প্রকল্প দাখিল করেন চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান।’ উপজেলা পরিষদের সভায় (২৬-১১-২০২০) প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। বিধিমোতাবেক টয়লেটটি নির্মানের জন্য সরকারের সাথে চুক্তিও সম্পন্ন করেন ওই ইউপি চেয়ারম্যান। গত ৪ মে নির্মান কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু বিধিভঙ্গ করে পুরোনো টয়লেটটি সংস্কার করে গত ২৪ জুন বরাদ্দের টাকা উত্তোলনের আবেদন জানিয়ে বিল দাখিল করেন ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে বিলটি আটকে দেওয়া হয়। গণশৌচাগারটি নির্মানে সোমবার (২৮ জুন) উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভায় তদন্ত টিম গঠণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।