সম্পর্ক
লেখনীতে শ্রীমতী মেরিন সাহেব
রবীন্দ্রনাথ না কে যেনো কইছিলো ” আত্মীয়তা আসলে রক্তের হয়না, হয় অনুভূতি ও অনুভবের” ব্যাটা আসলে ঠিকই কইছেন।রক্তের সম্পর্কের ভাইবোন দ্যাখবেন বছরকে বছর সম্পত্তির লইয়া, বইনের বাড়ি গাড়ি দামী গয়না, ধন্যবাদ, দুঃখিত কওয়া লইয়া কথা কয়না। কেরে ভাই কইলে কী হয় মইরা যাবি তবুও হালার ইগো ছাড়বি না। আবার অফিসের সহকর্মীরা দেখেন উইঠা বাথরুমে গেলেই শুরু হইয়া যায় পিছে পিছে বদনাম কওয়া। কিন্তু তবুও দিন শেষে সবাই সব জাইনা চাকরির খাতিরে হিহিহি করতে করতে অফিস থাইকা বাইর হয় আর চাকরি জীবন শেষে তারেই সবচেয়ে কাছের মানুষ লাগে। নিজেগো পোলা মাইয়া পর্যন্ত বিয়া দিয়া ফালায়।
স্কুলের বান্ধবীডা যে অংকে বিজ্ঞানে ফেইল না করলে কিংবা আমার চেয়ে বেশি নম্বর পাইলে হিংসায় জ্বইলা কয়লা হইতাম ঈদের জামাডা আমার চেয়ে তারডা বেশি সুন্দর অইলে পোড়ানি আইতো। আইজ হেই সখী কষ্টে পইরলে কয়দিন খবর না পাইলে পরাণ পোড়ে মন কান্দে। মনে হয় কিসু কিসু সময় তুই শুধু আমার বান্ধবী না বইনের চাইতে বেশি কিছু। প্রত্যেকটা মানুষ আসলে ভীষণ রকম একা। বিশুদ্ধ একাকীত্বের প্রতিযোগিতা নিয়ে সেই কোটি কোটি স্পার্ম এর সাথে যুদ্ধ করে শালার আমি,তুমি, আপনাদের এই নষ্ট পৃথিবীতে আগমন কেউ কারো ভালো চায়না এমনকি দেখতেও পারেনা সেই স্পার্ম অবস্থা থেকেই। সে একা টিকে থাকতে চায় এটাই প্রাকৃতিক নিয়ম। তবুও মানুষ, মানুষ নিয়েই চলে, চলতে চায় তুমি ভাই তারে এই দুনিয়ায়ই চিনলানা আখিরাতে কেমনে চিনবা।
অসুস্থ আত্মীয়ের হক আদায় করো না। তার খোঁজ নেওনা কিসের তুমি মুসলমান বইলা দাবি করো আবার নিজেরে একেক জন কুরআনের হাফেজ, হাজী বইলা দাবি করো???? আজকাল কোন ঊৎসব মানেই বাইরের রেস্টুরেন্টে এমন কি রাস্তায় ডাস্টবিন এর ময়লার পাশে বইসা খাইতে হয়। কেরে ভাই, তগো মা, বইন, বউ কিছু রান্ধে বাড়ে না? ফইন্নির গরে ফইন্নি। তগো গেরামে ঘরবাড়ি নাই। রিসোর্ট এ ঘুরতে যাওয়া লাগবো কেন ঈদে চান্দে? নিজের গেরামের বাড়িডারেই রিসোর্ট বানায় ফেলা। উৎসবে রাস্তা ঘাটে কেন? একসাথে বাপ মা বইন ভাই, ভাইবইনের পোলা মাইয়া বেবাকতেরে লইয়া একসাথে ঘরে খা, গল্প কর। আত্মীয় স্বজনের বাসায় যা। আর বফ গফ তো সারাবছরই থাকে এক দুই ঘন্টা এনাফ সারাদিন কেন এতো ইটি পিটিস।
প্রযুক্তি মানুষকে আত্মীয় বিমুখ একাকী করে গড়ে তুলছে। প্রযুক্তির সীমাহীন ব্যবহার আপনার সন্তানকে ছিনতাইকারী, চোর, ডাকাত, অসভ্য, অসামাজিক, বুনো, রোবট বানিয়ে ফেলছে সেই দিকে একটু নজর দিয়েন।নয়তো আপনার মৃত্যু কিংবা অসুস্থতায় ও মোবাইল পাপজি বাপজি নিয়ে পরে থাকবে। ভাবছেন আমার কাঊকে লাগে না, আসলেই লাগেনা মানুষের স্বভাব দোষ এর কারন। সমস্যা হইলো আমার প্রতি আপনার অনুভব অনুভূতির অভাব। আমি ও আমার পুরো পরিবার আজীবন গ্রামের লোক, আত্মীয় স্বজন কারো বিপদে আপদে উড়ে গিয়ে জুড়ে বসতাম এখনো করি কিন্তু আমার বিপদে কাঊকে পাশে থাকার কথা বলবো আপন কারো নাম মাথায় তখন আসেনা। মনে হয় যদি ভাবে উপকার এর প্রতিদান চাচ্ছি। আমার একান্ত একাকীত্বে কাউকেই পাশে পাইনা।
মাঝে মাঝে মনে হয় আজ যদি মারা যাই শুক্রবার জুম্মার টাইম না হইলে কাঊকে খুইজাই পাওয়া যাইবো না। ৩ দিন পর ফোন দিয়া হাই হুতাশ কইরা শোক আর একটা স্টাটাস মাইরাই শেষ দায়িত্ব। থাক ভালো থাক সবাই, ভালো থাক অনুভব অনুভূতির অভাবগ্রস্থ সম্পর্কগুলোও , প্রতিদান চাইনা লুংগি সামাল দে। বিঃ দ্রঃ আঞ্চলিকতাকে অন্যভাবে নিয়েন না মনের দুঃখ মনের ভাষায় লিখলাম ইচ্ছা হইলো তাই তবে খবর হইসে লিখতে যাইয়া। কেউ আবার নিজের উপর আমার কথা নিয়ে গাল ফুলাইয়েন না এই কথা গুলো পুরোই সার্বিক চিন্তা ভাবনা কারো চরিত্রের সাথে মিলে গেলে আমি দায়ী নই। লেখনীতে শ্রীমতী মেরিন সাহেব ছবির মানুষ গুলো অনুভবের সবার ছবি নেই।