নাটোর নিউজ : প্রায় 50 বছর আগের সুইজারল্যান্ডে ‘সুইস ব্যাংক’ নামে একটি প্রাইভেট ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বিশ্বের অন্যান্য ব্যাংক থেকে এই ব্যাংকের নিয়ম আলাদা ছিল। এই ব্যাংকটি তার গ্রাহকদের টাকা পয়সার রক্ষণাবেক্ষণ ও গোপনীয়তার বিনিময়ে গ্রাহকদের কাছ থেকেই টাকা আদায় করত সঙ্গে গোপনীয়তার গ্যারেন্টি!! না গ্রাহকদের জিজ্ঞাসা করা হতো টাকা কোথা থেকে এসেছে? না কোনো প্রশ্ন না কোনো বাধ্যবাধকতা!! এক বছরে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল এই ব্যাংকের সুনাম। চোর… অসৎ নেতা, মাফিয়া, বড় ব্যবসায়ী সবার প্রথম পছন্দ সুইস ব্যাংক।
ব্যাংকের একটাই নিয়ম ছিল রিচার্জ কার্ডের মত একটি নম্বর অ্যাকাউন্ট হোল্ডার কে দেওয়া হতো সঙ্গে একটি পাসওয়ার্ড। ব্যাস,যার কাছে এই নম্বর থাকতো ব্যাংক তাকেই জানতো, অন্য কোন ডিটেলস এর প্রয়োজন নেই। কিন্তু ব্যাংকের একটা নিয়ম ছিল সাত বছর লেনদেন না করলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অ্যাকাউন্ট সিজ করে টাকা পয়সা নিজের অধিকারের নিয়ে নেবে। এই পৃথিবীতে নিত্যদিন না জানি কত মাফিয়ার হত্যা হয় , কত নেতা ধরা পড়ে, কত চোর ধরা পড়ে বা মারা যায়, কত জনের যাবজ্জীবন হয়। এই পরিস্থিতিতে না জানি কত অ্যাকাউন্ট ব্যাংক সিজ করেছে। 2000 সালে নতুন শতাব্দী উপলক্ষে ব্যাংক যখন এমন অ্যাকাউন্ট গুলো দেখছিল তখন তার মধ্যে পাওয়া কালো টাকা সারা বিশ্বের 40% কালো টাকার সমান ছিল।
পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক কালো টাকা!! এই পরিমাণটা আমাদের কল্পনার বাইরে। ব্যাংক হয়তো বুঝতে পারছিল না এই পরিমাণ টাকা দিয়ে কি করা উচিত। অনেক ভেবে ব্যাংক একটি ঘোষণা করে সুইজারল্যান্ডের নাগরিকদের কাছে এই টাকা নিয়ে কি করা যায় তা নিয়ে মতামত চাইলো, তার সাথে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এটাও বললো দেশের নাগরিকরা চাইলে ব্যাংক তাদের এই টাকা বিতরণ করতে পারবে এবং প্রতিটি নাগরিক পাবে 1 কোটি করে। সরকারের তরফে চলা 15 দিনের সার্ভেতে 99.2% মানুষের রায় ছিল এই টাকা দেশের সৌন্দর্য বাড়ানো এবং বিদেশী পর্যটকদের সুখ-সুবিধা ও উন্নয়নে ব্যয় করা হোক। সার্ভের ফলাফল আমাদের ভারতীয়দের জন্য চমকাবার মতো কিন্তু দেশ প্রেমিক সুইজারল্যান্ডের জনগণের জন্য এটা সাধারন ব্যাপার ছিল।
তারা কালো টাকা প্রত্যাখ্যান করেছে। বিনামূল্যে কিছুই চাইনা এটাই তাদের স্পষ্ট মতামত। চমকাবার মত একটি ঘটনা দ্বিতীয় দিন ঘটলো। 25 জনুয়ারি 2000 সালে সুইজারল্যান্ডের জনতা ব্যানার নিয়ে সরকারি সার্ভে অফিসের বাইরে দাঁড়িয়ে বলল যে .8% মানুষ এক কোটি টাকা চেয়েছে তাদের নাম সর্বজনীন করা হোক। এরা সমাজ এবং সুইজারল্যান্ডের কলঙ্ক। সরকারের কাছ থেকে বিনামূল্যে দাবি কারীদের শাস্তির আশ্বাস দেওয়ার পর জনগণ শান্ত হলো। আর আমাদের ভারতে!! এদের 15 লাখ টাকা চাই সরকারের কাছে, জল,বিদ্যুৎ ফ্রিতে চাই, ট্যাক্স পরিশোধ নয় কিন্তু ভর্তুকি চাই। প্রথমে দেশপ্রেম চিনুন বা শিখুন ফ্রি খাওয়ার অভ্যেস আপনা থেকেই চলে যাবে।
সংগৃহীত সৌজন্যে বাবুলাল চৌধুরী