বিশেষ প্রতিবেদক, নাটোর নিউজ: দলের ৭২ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণে বাধাদানের অভিযোগ করেছেন নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের ও এর অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনগুলোর একাংশের নেতৃবৃন্দ। এতে শহরের একটি বিপণী বিতাণ চত্বরে জাতির পিতার অস্থায়ী প্রতিকৃতি বানিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন ওই নেতাকর্মীরা।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না জানানো ও বাধা দেয়ার অভিযোগ করেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজান, সৈয়দ মোর্ত্তোজা আলী বাবলু, প্রচার সম্পাদক চিত্তরঞ্জন সাহা ও সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মালেক শেখ।
আওয়ামী লীগের চার নেতা অভিযোগ করেন, বুধবার(২৩ জুন) জেলা আওয়ামী লীগের কান্দিভিটুয়া অস্থায়ী কার্যালয়ে দলীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মূল কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়। ওই কর্মসূচীতে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুল। কিন্ত এই কর্মসূচীতে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি তাদেরসহ বেশ কয়েকজন পদস্থ নেতাকে। অথচ আমন্ত্রণ পান সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের অনুসারীরা। তাই তারা সম্মিলিতভাবে সাংসদ শিমুলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠান সমাপ্তির পর অস্থায়ী কার্যালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের সিদ্ধান্ত নেন। সে অনুযায়ী কার্যালয় থেকে দূরে নীচাবাজার বিসমিল্লাহ কমপ্লেক্সের সামনে মিলিত হন। কিন্ত শেষ পর্যন্ত তারা আর দলীয় কার্যালয় পর্যন্ত যেতে পারেননি।
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজান বলেন, সাংসদ শফিকুল ইসলাম শিমুল অনুষ্ঠান শেষ করে দলীয় কার্যালয় ছেড়ে গেলেও তার নির্দেশে বেশ কিছু বহিরাগত যুবক সেখানে অবস্থান নেন। তাই আমরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতে পারিনি।
অপর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোর্ত্তোজা আলী বাবলু বলেন, আমরা দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর দিন কোনরকম সংঘাতে জড়াতে চাইনি। পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ রাখার স্বার্থে আমরা স্বল্প পরিসরে কর্মসূচী পালন করেছি। আমরা দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়েছি রাজপথ থেকে আর আজ হাইব্রিডরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান। এর চেয়ে দুঃখজনক কিছু হতে পারে না।
সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মালেক শেখ বলেন, আজকে আমাদের উদ্যোগেই জেলায় সবচেয়ে বড় কর্মসূচী পালনের পরিকল্পনা ছিলো। কিন্ত আমাদের হুমকি দেয়া হয়েছে। আমাদের কর্মসূচী পালন করতে দিলেন না সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আমাদের অনুরোধ করেন আমরা যেন দলীয় কার্যালয়ে না যাই। আমাদের নেতাকর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা নিয়ে আমরা দলীয় কার্যালয় পর্যন্ত যাইনি। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল বলেন, কেন্দ্রের নির্দেশ ছিলো সর্বোচ্চ ৫০ জন নিয়ে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালনের। কাউকে আলাদাভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। কাউকে কর্মসূচী পালনে বাধা দেয়ার প্রশ্নই আসে না। যেখানে অধিকাংশ নেতাকর্মী দলীয় কার্যালয়ে এসে কর্মসূচী সফল করেছেন সেখানে গুটিকয়েক ব্যক্তি দলীয় ব্যানারে কর্মসূচী পালন করে সাংগঠনিক সিদ্ধান্তের পরিপন্থী কাজ করেছেন।
একাংশের কর্মসূচী পালনে অনান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ সদস্য শফিউল আযম স্বপন, পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ ডলার, ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আজিজুল ইসলাম আরজু, আওয়ামী লীগ নেতা কাজী শরিফুল ইসলাম বিদ্যুত, রেজাউল করিম প্রমুখ।