ভ্যাকসিন কেচ্ছা: – জাকির তালুকদার
এক বছর আগে স্বাচিপ সভাপতি ডা. ইকবাল আর্সলান হতাশ এবং বিরক্ত হয়ে টিভিতে ভ্যাকসিন নিয়ে কথা বলছিলেন।
তিনি করোনা নিয়ন্ত্রণ পরামর্শক কমিটির সদস্য।
তিনি বলছিলেন, কমিটি থেকে বারবার বলা হচ্ছে ভ্যাকসিনের ব্যাপারে তৎপর হতে। বলছিলেন, ইউরোপ-আমেরিকার পাশাপাশি আরো কিছু দেশ তাদের জনসংখ্যার তিনগুণ সংখ্যক ভ্যাকসিনের অগ্রিম অর্ডার ও টাকা দিয়ে রেখেছে বিভিন্ন উৎপাদক কোম্পানিকে।
কিন্তু আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী আর মন্ত্রণালয়ের বড় আমলারা সেকথা কানেই তোলে না। তাদের কথা ছিল, তখনো কোনো কোম্পানির ভ্যাকসিন ট্রায়াল শেষ হয়নি, কেউ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পায়নি, আমরা কেন ভ্যাকসিনের বুকিং দিতে যাব? ইউরোপ-আমেরিকার মন্ত্রী-আমলারা বোকা, তাই ওরা অগ্রীম টাকা দিয়ে বসে আছে।
ইকবাল আর্সলান সরকারি দলের চিকিৎসক সংগঠনের প্রধান নেতা। তথ্য উল্লেখ করে পরামর্শ দিলেও তার কথার কোনো দাম নেই।তাকে কাছে পেলে সান্ত্বনা দিতাম। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের তাহাজ্জুদের ওয়াক্তে ভোটের পর সব রাজনীতিবিদেরই একই অবস্থা। এমপি বা সরকার জনগণ বানায়নি। বানিয়েছে আমলা এবং পুলিশরা। অতএব তারা যা বলবেন সেটাই হবে।
যাক সে কথা।ভ্যাকসিন এলো। মন্ত্রী আর নেতারা শুরু করলেন চিরাচরিত মিথ্যাচার। অত তারিখে ভ্যাকসিন আসবে এত লাখ, অমুক মাসে আসবে এত কোটি ডোজ।
সেইসাথে করোনাজয়ে প্রধানমন্ত্রীর নামে অবিরাম জয়ধ্বনি।
ইউরোপ-আমেরিকার চাইতে বুদ্ধিমান আমাদের নীতি-নির্ধারকদের মুখে চওড়া হাসি। উনারা এতই ব্যক্তিত্ববান যে নিজেদের মহাসাফল্য নিয়ে এখনো বড়গলায় কথা বলে চলেন। (লাজ-লজ্জা আম পাবলিকের বিষয়)।
অবস্থা যে লেজে-গোবরে, তা তারা ছাড়া আর সবাই জানে।
অবশেষে গতকাল স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বীকার করেছেন যে আগস্ট পর্যন্ত তিনি ভ্যাকসিন পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন না।
কিন্তু মন্ত্রী বললে কী হবে? আজ প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আশ্বাস দিলেন– আগামী মাস থেকে ব্যাপক হারে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হবে। আমি মনে করি, বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতায় মন্ত্রীর হতাশার চাইতে সচিবের আশ্বাসের ওপর ভরসা রাখাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। অতএব হতাশ হইবেন না।