Homeমুক্তমতলেখালেখি ও ছাত্র রাজনীতির ব্যাকগ্রাউন্ড - জাকির তালুকদার

লেখালেখি ও ছাত্র রাজনীতির ব্যাকগ্রাউন্ড – জাকির তালুকদার

লেখালেখি ও ছাত্র রাজনীতির ব্যাকগ্রাউন্ড – জাকির তালুকদার ছাত্র রাজনীতি, বিশেষ করে, বাম ছাত্র রাজনীতির সাথে লেখালেখির কি কোনো সম্পর্ক আছে? লেখক-কবি হয়ে ওঠাতে প্রগতিশীল ছাত্র রাজনীতির এই ব্যাকগ্রাউন্ড কি কোনো ভূমিকা পালন করে? কোনো সম্পর্কসূত্র আবিষ্কার করা যায়নি। তবে উদাহরণ এটিকে অনেকখানিই সমর্থন করে।

আমার এই অভিজ্ঞতা পুরোপুরি রাজশাহী কেন্দ্রিক। মামুন হুসাইন হইচই ভিড় হট্টগোল থেকে দূরে থাকা মানুষ। এমনকী তার সাহিত্যিক আড্ডাগুলোও ছিল খুবই সংক্ষিপ্ত। কিন্তু মামুন ভাই ছাত্র রাজনীতি করতেন। করতেন ছাত্র মৈত্রী। ইমতিয়ার শামিম বাসদ ছাত্রলীগের নেতা।

ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে রাকসুতে সাহিত্য সম্পাদকও হয়েছিলেন। আনজীর লিটন করতেন জাতীয় ছাত্রলীগ (বাকশাল)। দীপু মাহমুদ ছাত্র ইউনিয়ন থেকে রাকসুর নির্বাচনে জিতেছিলেন। ক্যাম্পাসে তিনি লেখকের চাইতে নাট্যকর্মী হিসাবে বেশি পরিচিত ছিলেন। শামীমুল হক শামীম ছিলেন ছাত্র সমিতির (ন্যাপ মোজফফর) নেতা। আযাদ কালাম জাসদ ছাত্রলীগ।

আদীল জাসদ ছাত্রলীগ। চঞ্চল শাহরিয়ার সেভাবে রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না। তবে বামমুখি। সাঈদ কাজল, রতন সিদ্দিকী ছাত্র ইউনিয়নের নেতা। আমিনুর রহমান সুলতানও। নয়ন হাফিজ সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাথে যুক্ত। কবি মোহাম্মদ কামাল ছাত্র মৈত্রীর সাথে ছিলেন। আরিফুল হক কুমার আরেকটু বেশি বাম।

কৈশোরেই ঘটনাক্রমে গোপন রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়ে পড়েছিলেন। তারিক-উল-ইসলাম কোনো ছাত্র সংগঠনে নাম লেখাননি বোধহয়। তবে প্রগতিশীল রাজনীতির সাথে সমমনা ছিলেন। নিশাত জাহান রানা প্রগতিশীল আবৃত্তি সংগঠন স্বনন-এর কর্ণধার ছিলেন। ফয়জুল ইসলাম সুমন সেই স্বননেই।

আমাদের প্রিয় আহসান হাবিব নবু ভাই ছিলেন জাতীয় ছাত্রলীগ (বাকশাল) এর মেডিক্যাল কলেজ কমিটির সভাপতি। নাজিব ওয়াদুদও জাতীয় ছাত্রলীগ করতেন। পরবর্তীতে কীভাবে যেন ঝুঁকে পড়েন জামাতের রাজনীতির দিকে। আবার প্রত্যাবর্তন। মেডিক্যাল কলেজের চিন্ময় দাস ছাত্র মৈত্রীর দাপুটে কর্মী ছিলেন। আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সমকাল নাট্যগোষ্ঠীর সদস্য।

সমকাল এবং অনুশীলন দুটোই ছিল প্রগতিশীল নাট্য সংগঠন। মাসুম রেজা অনুশীলনের কেন্দ্রব্যক্তিত্ব ছিলেন। গিয়াসউদ্দীন সেলিমও অনুশীলনে। পরে দলভেঙে বিশ্ববিদ্যালয় থিয়েটার গড়েছিলেন। রাজশাহী শহরে হাসনাত আমজাদ একসময়ে ছাত্র মৈত্রী করতেন। পরে কোনো রাজনৈতিক চিন্তা বা কর্মকাণ্ডে তাকে দেখা যায়নি। শহরে সকল সাহিত্যকর্মের কেন্দ্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন রুহুল আমীন প্রামাণিক। এখনো।

ছাত্র ইউনিয়নের নেতা ছিলেন। পরবর্তীতে সরকারি চাকুরি করার সময়েও একই ধারায় কাজ করে গেছেন। এখন সুফিতাত্ত্বিক। ওয়ালী কিরণ ছিলেন ছাত্র মৈত্রীর প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের একজন। অনীক মাহমুদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কথা জানা যায় না। তবে তার অভিন্নহৃদয় বন্ধু কবি মালেক মেহমুদ ছিলেন বঙ্গবন্ধুর অন্ধভক্ত। শিশুসাহিত্যিক আশরাফুল আলম পিন্টু রাজনীতি থেকে দূরেই ছিলেন।

সিরাজুদ্দৌলাহ বাহারও। তবে মাহবুবুর রহমান বাদশাহ ছাত্র ইউনিয়নের সাথে সম্পৃক্ত। রাজশাহীতে ঐ সময় হাসিনা ছাত্রলীগ ছিল খুবই ছোট সংগঠন। তাদের ভেতর থেকে কোনো লেখক বা কবি বেরিয়ে আসেনি। বিশাল সংগঠন ছিল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের।

কিন্তু সেই সংগঠন থেকেও কোনো উল্লেখযোগ্য লেখক-কবি উঠে এসেছেন, এমনটি জানা যায় না। ছাত্র শিবিরের কেউ কেউ মগবাজারকেন্দ্রিক জামায়াতের সাহিত্য পল্লীর সদস্য ছিলেন হয়তো। কিন্তু তাদের নাম মূলধারার সাহিত্যে আসেনি। কোনো পর্যালোচনা নয়। আমার তারুণ্য-যৌবনের রাজশাহী-জীবনের সাহিত্য জগতের কথা ভাবতে গিয়েই নামগুলো উঠে আসা।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments