রমন রাঘবের তৃষ্ণার্ত রড ও শ্রীরামকৃষ্ণদেব ঘুমিয়ে ফুটপাতে – অমিতকুমার বিশ্বাস
আপনি কি একজন গতেবাঁধা সিরিয়াল কিলার হতে চান? কিংবা হতে চেয়েছিলেন কখনও? স্টেশানে দাঁড়ানো লাখোলাখো লোক ঝাঁঝরা করতে চেয়েছিলেন কখনও— আড়াই মিনিটে মাত্র? কিংবা রাতপথে বাড়ি-ফিরতি মেয়েদের নগ্নতা শূন্যে খুবলে কখনও ইচ্ছে হয়েছিল মিয়াঁ খালিফার অয়েল-পেন্টিং? কখনও পাশের বাড়ির ছাদখোলা বাথরুমে উঁকি মেরেছিলেন চিলেকোঠা থেকে, অন্তত? কিংবা নিজের অসুস্থ লিঙ্গে ব্লেড চালিয়ে ফালাফালা করতে ইচ্ছে হয়েছিল কখনও? অ বা ন্ত র প্র শ্ন! এগুলোর উত্তর দিতে হবে—কে এমন মাথার দিব্যি দিল আবার? দেখুন, রাঘব—যে কিনা বোয়াল নয়, রুই ও কাতলাও নয়, পুঁটি বা ঝিয়া-টাইপ হয়তো— বাহাত্তর ঘণ্টা জেরার সামনেও শান্ত, নিরুত্তর—আর-একটা সিগারেট চাইছে শুধু… হাঃ হাঃ—অতঃপর এই রমন রাঘব ছাড়া পেয়ে গেল সাতচল্লিশজন গরিবগুরবোকে সামান্য এক লোহার রড দিয়ে রাতের অন্ধকারে ফুটপাতে থেঁতলানোর পর। লাশগুলো দেখে প্রেম ও পেচ্ছাব পেত খুব। কিন্তু সেসব ছেড়ে সেখানেই মাস্টারবেট করে ফেলত ঝটাপট। একটা লোককে পুলিশ বাগে পাচ্ছে না কিছুতেই। সারাদিন পোঁ-পোঁ করে শেষে খুঁজে পাচ্ছে লতিকা শুয়ে নতুন পুরুষের সঙ্গে—’দে টাকা দে!’ এদিকে ফুটপাতে আর-একটা লাশ। মৃতা কিশোরীর অন্তর্বাস গায়েব। —পুলিশ কৌন হ্যাঁয়? —হাম হ্যাঁয়! —চোর কো কান ধরে পাকড়াও! শহর-জুড়ে গ্রাম-জুড়ে চিটফান্ডের গাছ ও আগাছা— লাগালেন খোদ বড়েমিঁয়া-ছোটেমিঁয়া। —সুবহানাল্লাহ! কত অভিনেতা-অভিনেত্রী, নেতা-নেত্রী… —সুবহানাল্লাহ! মাইক-অমাইক—মাইক-অমাইক—মাইক-অমাইক এদিকে বাড়ি বাড়ি মিত্রোঁ পাত্রর ড্রোন হামলা —একটা স্কিমে জমাকর ভাই। বেকার—বুঝিস তো সবই। একটাই তো করবি মাত্র। দু-বছরে ডবল! আরে কোম্পানি উঠে গেলে আমি দেব—আমি পকেট থেকে দেব! আছি তো। কোথাও চলে যাচ্ছি না কি মরে যাচ্ছি? আর কী বলেছেন তিনি? না— টাকা মাটি, মাটি টাকা। আর আমি বলি, মাটিতে পোতো টাকা/ দু-বছরে ঘুরাও চাকা! ভুম-ভুম-ভড়ুম! হাঃ হাঃ হাঃ… ভাইরে-ভাই ডবল ডিমের পোঁচ লোভ লোভ লোভ লোভের বাপ—বাপের মৃত্যু বিচার বিচার বিচার এ জেলে—ও কোলে কী হল আলটিমেট? কী কী কী? —পুলিশ কৌন হ্যাঁয়? —হাম হ্যাঁয়! —চোর কো কান ধরে পাকড়াও! সহোদরার শাড়ি ধরে টানল রাঘব। টাঙিয়ে রাখল বারান্দায়। টানা দেড় ঘণ্টা… এ-রড, সে-রড! র ক্তা ক্ত! রাঘব সিগারেট না-পেলে মুখ খুলবে না—সাফ জানিয়েছে। সিগারেট খাওয়া বারণ। বিধিসম্মত বিজ্ঞাপন বেরুচ্ছে। বিক্রিও হচ্ছে দেদার। হরিহর, তুমি না হেব্বি আছ গুরু! ‘চিটফান্ড চিটফান্ড’ করে হড়হড়িয়ে হেগে দিলে মঞ্চে— আর এখন রড হাতে বেরিয়ে পড়েছ ফুটপাতে? কার মাথা খাবা আজ মাঝরাতে? কার ব্লো-জব? —পুলিশ কৌন হ্যাঁয়? —হাম হ্যাঁয়! —চোর কো কান ধরে পাকড়াও! —শহরে আর কোনও গরিব থাকবে না, ম্যালেরিয়া-ডেঙ্গি থাকবে না, এনকেফেলাইটিসও থাকবে না, আমরা আছি আপনাদের পাশে… —আমি তো গরিব হটিয়ে দিচ্ছি সাহেব একটা-একটা করে…আর আমাকেই কিনা আপনারা…? —আজ যে তিনজন মারা গেল ডেঙ্গিতে? —না না, অন্যকারণ। অজানা জ্বর। ডেথ-সার্টিফিকেট দেখুন। পড়তে জানেন? —আমি তো ওইখানেই ভোট দিছিলাম…! এ আমার কী সব্বনাশ হোলো গো…!!! পুলিশ! অ্যায় পুলিশ! পু উ উ উ উ উ উ উ উ উ উ উ উ উ উ উ… —এই যে সাব! —পুলিশ কৌন হ্যাঁয়? —হাম নেহি হ্যাঁয়। হাম তো ভাড়ে কা টাট্টু হ্যাঁয়! পুলিশ! অ্যায় পুলিশ! পু উ উ উ উ উ উ উ উ উ উ উ উ উ উ উ… —কিয়া সাব? —পুলিশকৌন হ্যাঁয়? —হাম নেহি হ্যাঁয়। হাম তো রমন রাঘবকে ল্যাংগোটিয়া দোস্ত হ্যাঁয়! পুলিশ! অ্যায় পুলিশ! পু উ উ উ উ উ উ উ উ উ উ উ উ উ উ উ… ধোঁয়া ছাড়ল রাঘব। পুলিশও ছাড়ল। একে-অপরের ধোঁয়া গিলে খাচ্ছে দুজনে। ধোঁয়াতেই হজম তামাম আম-জাম-হামওঠা আদমি। অন্ধকার মোড়ে দাঁড়িয়ে মেন্টাল মাস্টারবেট করা ছেলেগুলোর বাপ-মা খোল বাজিয়ে কীর্তনে। —দিবারাত্র খোলা, অথচ এইমাত্র ফুরিয়ে গেল জীবনদায়ী ওষুধ। এভিএস আসেনি গতমাস থেকে… —মেয়ের বাবা-হওয়া যে কী কঠিন কীকরে বোঝাই তোমায়…! —কী হবে প্রতিবাদ করে? রডের সামনে আমরা অসহায়! ওই মোড় দিয়ে আসতেই হয়। সেদিন হঠাৎ লোডশেডি! ছেলেগুলো এগিয়ে এল। ওদের হাতে-হাতে স্মার্ট ফোন। ফোন ফণা তোলে, ফোঁস করে। সবারটায় পর্ন মুভি! আমি-মেয়ে চিৎকার করলাম! আমাকে তো রড মেরে…এই —এই দ্যাখো, সাতটা স্ট্রিচ! —কেউ ধরা পড়ল? —জানি না। ধরা তো আমরাই পড়েগেলাম হাতেনাতে। মেয়েটাও। পুলিশ! অ্যায় পুলিশ! পু উ উ উ উ উ উ উ উ উ উ উ উ উ উ উ… —এই যে সাব! —পুলিশ কৌন হ্যাঁয়? —হাম নেহি হ্যাঁয় সাব। হাম তো ভাড়ে কা টাট্টু হ্যাঁয়!