আল-আফতাব খান সুইট বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশের মধূমাসে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু ছাড়াও অন্যতম আরেকটি ভিন্নধর্মী ফল তালের শ্বাসের চাহিদা নাটোরের বাগাতিপাড়ায় গ্রাম-শহরের সর্বত্র। স্থানীয় ভাষায় “তালকুর” নামে পরিচিত এই সুস্বাদু ফল প্রতিটি ৫ থেকে দশ টাকায় বিক্রি করতে পেরে খুশী বিক্রেতারা।
বর্তমানে উপজেলা বাজার থেকে শুরু করে গ্রামের বিভিন্ন অলিগলিতে এই মৌসুমী ফল তালের শাঁস বিক্রির বেড়ে গেছে। অনেক মৌসুমী ব্যবসায়ীরা তাল গাছ থেকে অপরিপক্ক তাল ফল পাইকারী কিনে খুচরা বিক্রয় করেন। তবে নরম অবস্থায় তাল শাঁসের দাম অনেক বেশি। কিন্তু দিন যতই যেতে থাকে এই তাল শাঁস ততই শক্ত হতে থাকে। তখন শাঁসের দাম কমতে থাকে এবং এক সময় তাল পরিপক্ক হয়ে গেলে তখন আর এই শাঁস খাওয়া সম্ভব হয় না।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার তালগাছগুলোতে এখন কচি তালে ভরে গেছে। মধুমাসের এ ফলকে কেউ বলে তালের শাঁস, কেউ বলে তালকুর, কেউ বলে তালের আঁটি। উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার, সি এন জি, অটো ভ্যানস্ট্যান্ড ও অলি-গলিতে তালের শাঁস বিক্রি করে অনেক হতদরিদ্র মানুষ জীবিকা নির্বাহ করছেন।
বাগাতিপাড়া উপজেলার মালঞ্চি রেলগেট প্রতিনিয়ত বিক্রি করতে দেখা যায় পৌর এলাকার আরিফ ও ফাগুয়ারদিয়াড় ইউনিয়নের পাচুড়িয়ার রমজান তারা জানান, তিনি প্রতি বছরই এ সময়ে তালের শাঁস বিক্রি করেন। গ্রাম অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে তাল ক্রয় করে গাছ থেকে পেরে এনে শাঁস বিক্রি করেন। তবে গাছ ওঠে, বাঁধা ধরে পাড়া সবচেয়ে কষ্টকর। বৈশাখ থেকে জৈষ্ঠ্যের অর্ধেক পর্যন্ত এ দেড় মাস চলবে তালের শাঁস বিক্রির কাজ। প্রতিদিন প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ শাঁস বিক্রি করা যায়। একটি শাঁস আকার ভেদে ৫ থেকে ১০ টাকা দরে বিক্রি করছি। এতে তার প্রায় ৪শ থেকে ৫শ টাকা লাভ হয়।
ক্রেতারা জানান, তালের শাঁস একটি সুস্বাদু ফল। গরম থেকে এসে তালের শাঁস খেয়ে ভালই লাগে মনটা জুড়ে যায়। ফলে এর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। তালের শাঁসের পুষ্টি গুণ সম্পর্কে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রতন কুমার সাহা বলেন, তালের শাঁস শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল। গরমের দিনে তালের শাঁসে থাকা জলীয় অংশ পানিশূণ্যতা দূর করে। এছাড়া, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি, এ, বিসহ নানা ধরনের ভিটামিন রয়েছে। তালে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। কচি তালের শাঁস রক্তশূন্যতা দূর করে। চোখের দৃষ্টি শক্তি ও মুখের রুচি বাড়ায়।