কল রেকর্ড (গল্প)- তন্ময় ইমরান
সাংবাদিকের হাতে গোয়েন্দা সংস্থার লোক পেনড্রাইভ ধরিয়ে দিল। সাংবাদিক লাফাতে লাফাতে আসলো টিভি স্টেশনে। লাইভ সংবাদ শুরু হয়ে গেছে।
ঢুকে গেল সোজা ভিডিও এডিটরের রুমে- ‘জাস্ট একটা কুদ্দুসের গ্রেপ্তারের ত্রিশ সেকেন্ডের ফুটেজের সাথে সিংক করে প্যানেলে পাঠায়া দেন। কুইক।’ এডিটরের এটার জন্য লাগবে তিন মিনিট। সে এমনকি হেডফোন পর্যন্ত কানে লাগালো না। এটা ব্রেকিং হবে…।
স্ক্রলের তখন অলরেডি ব্রেকিং চলতে শুরু করেছে৷
রিপোর্টার নিউজ এডিটরের কাছে এসে বললো- ভাই দ্রুত ওসি* (অন ক্যামেরা, প্রেজেন্টার যা বলেন) লিখে দেন।
আউটপুট এডিটর লিখে দিলেন-
“এদিকে কুদ্দুসের ওপর নির্যাতনের ঘটনা তার নিজেরই সাজানো নাটক ছিল বলে কুদ্দুসের স্ত্রী শেহনাজ তার বাবাকে ফোনে বলেছেন। তাদের ফোনালাপে জানা যায়, কুদ্দুস এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিজের অবস্থান শক্ত করতে চাচ্ছিল। ফোনালাপের রেকর্ড আমাদের কাছে এসেছে। চলুন শুনি।”
আউটপুট এডিটর এরপর ফোনকার্ডের প্রতীক সফটওয়ারে বসিয়ে দিলেন। সংবাদের প্রথম বিরতি চলছিল। দ্বিতীয় ধাপের শুরুতেই কুদ্দুসের স্ত্রীর ফোনালাপ হাতে আসার খবরটা প্রেজেন্টার পড়লো। তারপর চালু করা হলো ফোন রেকর্ড।
“উম্মা, চুকুস, চাকুস।
নারী কণ্ঠ: এটা কি ভেজা চুমু ছিল নাকি শুকনা চুমু!
পুরুষ কণ্ঠ: আমি কি তোমার স্বামীর মত রসকসহীন আইনের লোক নাকি! আমি হইলাম- বিসিএস ক্যাডার বুঝলা!
নারী কণ্ঠ: বিসিএস ক্যাডারের বাড়তি কী থাকে, যা আমার স্বামীর নাই। (খিলখিল হাসি)
পুরুষ কণ্ঠ: পাওয়ার বেশি, তা বোঝো না…
নারী কণ্ঠ: ওরে আমার পাওয়াররে, খালি তো চিৎ হয়ে থাকেন…
চুকুস চাকুস, উম্মআহ… (হঠাৎ করেই চুমোর আওয়াজ)
***
স্টেশনে সাড়া পড়ে গেছে। ৩০ সেকেন্ড চলার পর ফোনালাপ বন্ধ করা গেল।
***
রিপোর্টার তার সোর্সকে ফোন করেন।
-আপা সরি মানে ভুলে আমার বউ ও তার প্রেমিকের কল রেকর্ড দিয়া দিছি৷ ওরেও ট্রেস করতেছিলাম তো! কিন্তু আপ্নে একটু খেয়াল করবেন না… কি বালের সাংবাদিকতা করেন, যা দেই, তাই দিয়া দেন। আমার তো ইজ্জত শেষ!