ভাঙা সহজ,নির্মাণ কঠিণ কাজ- নাজিম শাহ্রীয়ার
মানুষ বাড়ী বদলের আগে আরেকটি বাড়ী খুঁজে নেয়,যেখানে তাঁরা সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারে।একটি রাষ্ট্র পরিচালনার আগে একটি সংবিধান এবং আইন তৈরি করতে হয়,যাতে দেশটি সুশৃঙ্খলিত হয়।এইভাবে কিছু ভাঙার আগে নতুন কিছু তৈরি করতে হয়।ভাঙা সহজ,নির্মাণ কঠিণ কাজ।
সমাজে অনেক বৈষম্য,অনেক অনিয়ম,অনেক অনাচার থাকলেও এখনো সমাজকে সবাই ভয় পায়,তাই খোলামেলা কোন কুকর্ম করতে দ্বিধা করে। সমাজের কোন লিখিত আইন বা সংবিধান নেই,তবু সমাজ যেন এক অদৃশ্য শাসন।ইদানীং রাজনীতি একটি ভিন্ন বিষয়,সেটি যেখানে সুবিধা পায় সেখানেই মাথা নোয়ায়,যার ফলে অনেক ক্ষেত্রে অনেক জটিলতার সৃষ্টি হয়।
সম্প্রতি দেখি মানুষ ধর্মের পেছনে লেগেছেন।কেউ তাই নিয়ে ব্যবসা করছেন,কেউবা যুক্তি তর্ক নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন যে সব মিথ্যে।আমি এর ফলাফল বড় ভয়ানক দেখছি।এই ক্ষেত্রে সত্য মিথ্যে আমার কাছে বিচার্য নয়।ওয়াজের দ্বারা যেমন মানুষের হৃদয় দূষিত হচ্ছে,তেমনি কোরানকে অস্বীকার করে মানুষের মনে যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে তার ফলাফল মোটেই উত্তম হতে পারেনা।দেখা যাচ্ছে একদল মানুষ ধর্মকে পুঁজি করে নানান অমানবিক কর্ম করছেন,আবার আরেক দল ধর্মের ভুলত্রুটি খুঁজে বের করে ব্যক্তি স্বাধীনতাকে প্রাধান্য দিচ্ছেন।ব্যক্তি স্বাধীনতা কোন খারাপ কিছু নয় বলে আমি মনেকরি,কিন্তু সেই ব্যক্তি স্বাধীনতার নামে যদি মানুষ অশ্লীলতার দিকে বা দুর্বিনীতের ধাবিত হয় সেটাই খারাপের লক্ষণ।
কতিপয় মানুষ বাদে শত শত বছর পার করে মানুষ আজ সভ্য জাতি বলে পরিগণিত।স্নেহ প্রেম ভালোবাসা,পাপ কর্মের প্রতি ভীতি এবং সত্যের পথে চলার মানুসিকতা নিয়ে বাঁধা এই সংসার।যে বিশ্বাসেই হোক,মানুষের ভেতর ভ্রাতৃত্ববোধ নিয়ে মানুষ এতোকাল সুখে দিন কাটিয়েছে,আজ তা হুমকির মুখে পড়েছে।সত্য হোক মিথ্যের হোক মানুষ একটি খুটিতে বাঁধা,এই খুটি ছিন্ন হলে একটি পাগলা ষাঁড়ের যে অবস্থা হয়,মানুষেরও সেই অবস্থা হবে বলে আমার মনেহয়।কথাটি ধর্ম ব্যবসায়ীদের বাদ দিয়ে বলা।
হিংসা বিদ্বেষ,যুদ্ধ কখনো শান্তি আনতে পারেনা।আমার যখন বাঁচার জন্য রক্তের প্রয়োজন তখন ধর্ম বর্ণ দেখিনা।আমি আমার নিজের চরিত্রের দিকে তাকিয়ে দেখিনা,যেখানে হিংসা বিদ্বেষ কলুষতায় ভরা,অথচ অন্যের দোষ খুঁজে বেড়াই।আসলে মানুষ একটি সাংঘাতিক জীব।গিরগিটির মতো রূপ পাল্টায়।কথায় বলে,’অল্প বিদ্যায় ভয়ংকরী,কথায় কথায় ডিকশেনারী’।
আমি মনেকরি,কোন কিছু ভাঙার আগে পারলে এমন কিছু নতুন পথ কেউ দেখাক যেখানে যুদ্ধ নেই,হিংসা নেই,পরশ্রীকাতর নেই,যেখানে কেবল সম্প্রীতি,ভালোবাসা,একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল,মানবতা বিদ্যমান। যদি তা না পারেন তবে মনে রাখবেন প্রকৃতি কিন্তু কাউকেই ছাড়বেনা,‘করোনা’’সুনামী’ জলোচ্ছ্বাস,টর্নেডো হয়ে বারবার আসবে।আগে নতুন কিছু নির্মান করেন যা মানুষের জীবনে শান্তি বয়ে আনবে।কারণ সব মিথ্যে হলেও জীবন সত্য,রাষ্ট্র সত্য,পরিবার সত্য,সংসার সত্য,এইসব সত্যকে কেউ অস্বীকার করতে পারবেনা,তাই চাই এগুলির সংস্কার যার লক্ষ্য হবে শান্তি ও সম্প্রীতি।আমি শান্তির পক্ষে।