বড়াইগ্রাম, নাটোর নিউজ: নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার নির্মানাধিন কামারদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ইট চুরির ঘটনা ঘটেছে। গত ৯ মে দিবাগত রাতে একই এলাকার আরশেদ আলীর ছেলে রাসেল ও তার কয়েকজন সহযোগী ইট চুরির সময় হাতে নাতে ধরে ফেলে এলাকাবাসী। এসময় চুরিকৃত ইট ও তাদের ব্যবহৃত ইজিবাইক, চার্জার ভ্যান ফেলে পালিয়ে যায় তারা।
প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসির মধ্যে আব্দুল লতিফ, আব্দুল হাকিম, রফিকসহ ১০/১২জন জানান- অভিযুক্ত রাসেল, পার্শ্ববর্তী নাটোর সদর উপজেলাধীন বড়বড়িয়া গ্রামের আক্কেল আলীর ছেলে রায়হানের কাছে বিদ্যালয়ের ইট গোপনে বিক্রি করে এবং সেই ইট তার সহযোগী আলিম, লিটন এবং মাহফুজ এর ইজিবাইক ও ভ্যানযোগে রায়হানের বাড়িতে পৌঁছে দেয়, কিন্তু যখন বিষয়টি নিয়ে এলাকায় গুজন শুরু হলে, রাতের অন্ধকারে চুরিকৃত ইটগুলো আবার বিদ্যালয়ে রেখে যাওয়ার চেষ্টা করলে এলাকাবাসী সম্মিলিতভাবে তাদের ধরে ফেলে। এসময় অভিযুক্তরা দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে এলাকাবাসীর হাত থেকে কোনরকম পালিয়ে যায়, ফেলে রেখে যায় তাদের ব্যবহৃত ইট বোঝাই চার্জার ভ্যান ও ইজিবাইক। পরে ধৃত ইট ও বাহনগুলো সারা রাত পাহারায় রাখেন জোয়াড়ি ইউপি’র ১ নং ওয়ার্ড এর চৌকিদার মুফাজ উদ্দিন।
বিষয়টি তাৎক্ষণিক ঠিকাদার কে জানান এলাকাবাসী, কিন্তু তিনি ঘটনাস্থলে আসেন পরেরদিন বেলা ১২টায়। প্রথমে তিনি বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও এলাকাবাসীর সামনে স্থানীয় প্রশাসনকে জানাতে বাধ্য হন। পরে বনপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই কামরুজ্জামান ঘটনাস্থলে এসে চুরি কাজে ব্যবহৃত ইজিবাইক ও চার্জার ভ্যান থানায় নিয়ে যায়
এলাকাবাসী আরো জানান- বিদ্যালয়ের সরকারি ভাবে নিযুক্ত একজন নৈশপ্রহরী কাম পিয়ন থাকতে এ ধরনের চুরির ঘটনা ঘটলো, অবশ্যই বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী মিরাজ উদ্দিন ঘটনার সঙ্গে জড়িত আছে। তারা বলেন, ঘটনার দিন বিকেলে প্রথম ভ্যান ইট মিরাজ এর সামনেই ঠিকাদার ইউসুফ এর কথা বলে নিয়ে যায় রাসেল।
কামারদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী কাম পিয়ন মিরাজ উদ্দিন বলেন, আমি এ ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলাম না। আপনি নৈশপ্রহরী, তাহলে ডিউটির সময় কোথায় গিয়েছিলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
অভিযুক্ত রাসেলের সহযোগী ইজিবাইক চালক লিটন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন- রাসেল আমাকে ইট গুলো নিয়ে যাওয়ার জন্য ৩’শ টাকার বিনিময় ভাড়া করেছে এবং আমাদের কোন সমস্যা হবে না মর্মে আশ্বস্ত করায় আমি ভাড়ায় গিয়েছিলাম।এ বিষয়ে উক্ত নির্মাণকাজের ঠিকাদার ইউসুফ আলী প্রথমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানালেও বর্তমানে তিনি নিজেই অভিযুক্তদের পক্ষে সাফাই গেয়ে বিষয়টি সুরাহা করার চেষ্টা করছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বড়াইগ্রামের সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে অসংলগ্ন আচরণ করে ঠিকাদার ইউসুফ। উল্লেখ্য- ওই একই নির্মাণাধীন ভবনের শুরুতে চার তলা ফাউন্ডেশন কাজে দুই তলা ফাউন্ডেশন করে মোটা অংকের দুর্নীতি করার সময় ধরা খাওয়ার অভিযোগ রয়েছে এই ঠিকাদার ইউসুফের বিরুদ্ধে।
এ ব্যাপারে বড়াইগ্রাম কেন্দ্রীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক পিকেএম আব্দুল বারি বলেন, এত বড় ঘটনা ঠিকাদার নিজেই আড়াাল করার চেষ্টা করছেন কেন? এ ঘটনার সঙ্গে ঠিকাদার ইউসুফ নিজেই জড়িত কিনা খতিয়ে দেখার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহŸান জানান তিনি।
এ বিষয়ে বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আনোয়ারুল ইসলাম জানান- ১০মে বিকেলে অভিযোগ পেয়েছি তবে এখন পর্যন্ত কেউ আটক হয়নি।